বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি

ঝানু কূটনীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ দূত করতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর বিবিসির।

জো বাইডেনের ট্রানজেশনাল টিক স্থানীয় সময় সোমবার রাতে বাইডেনের কেবিনেট ও উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পাবেন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন, তাদের মধ্যে জন কেরির নামও আছে।

বাইডেনের মন্ত্রিসভায় আরেক অভিজ্ঞ কূটনীতিক ব্লিংকেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন, এটি মোটামুটি নিশ্চিত। ফেডারেল রিজার্ভের সাবেক চেয়ারম্যান জ্যানেট ইয়েলেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ট্রানজিশনাল টিম। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসেই তিনিই প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তার উদ্যোগ। বাইডেন এই গুরুভার দিতে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাট দলের বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও কূটনীতিক জন কেরিকে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত পদে এই প্রথম কাউকে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। জন কেরি এই পদে থেকে পুরো বিষয়টি দেখভাল করবেন।

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে জন কেরির কাজের অভিজ্ঞতা এর আগেও ছিল। ২০১৬ সালে বারাক ওবামার নেতৃত্বাধীন সরকারে জন কেরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে প্যারিস শান্তি চুক্তিতে সই করেন। এই চুক্তির আওতায় বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে কাজ করবে জাতি রাষ্ট্রগুলো।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূতের পদে জন কেরির নাম ঘোষণাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাইডেনের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ‘ফুলটাইম’ একজন দক্ষ ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়া হলো। আর এ ক্ষেত্রে তিনিই এই পদে অধিষ্ঠিত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলেও জায়গা পাবেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, বৈশ্বিক উষ্ণতার মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করেছেন। সবশেষ চলতি মাসেই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিস চুক্তি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে জো বাইডেন বলেছেন, ক্ষমতায় বসার পর তিনি যত দ্রুতসম্ভব ফের যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তিতে ফিরিয়ে আনবেন। জন কেরির মত সফল একজন কূটনীতিককে নিজের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূতের মর্যাদা দেয়ায় বাইডেন পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে নিজের প্রতিশ্রুতিগুলোকে বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যাবেন— এমনটিই মনে করছেন সবাই।

সোমবার মন্ত্রিসভার আর যেসব সদস্যের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে আলেহান্দ্রো মায়োর্কাস, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক পদে এভরিল হেইনিস, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে জেক সুলিভান ও জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে উঠে এসেছে লিনডা থমাস-গ্রিনফিল্ডের নাম।

প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৪৬ তম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ৩০৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২ ইলেকটোরাল কলেজ। পপুলার ভোটের ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে বাইডেন। ২০ জানুয়ারি নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.