যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া একাধিক ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন– এমন অভিযোগ ওঠার পর এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গার্ডিয়ান বলছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দেওয়া সম্পত্তিতে বসবাসের অভিযোগ উঠেছে টিউলিপ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানান তিনি।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লউরি ম্যাগনাসকে একটি চিঠি লিখেছেন তিনি। চিঠিতে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া একাধিক সম্পত্তিতে বসবাস করেছেন। গত বছরর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা।

টিউলিপ লউরি ম্যাগনাসকে লিখেছেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে আমি গণমাধ্যমে খবরের বিষয়বস্তু হয়েছি। আমার আর্থিক বিষয় ও বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের যোগসূত্র নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই ভুল।’

টিউলিপ আরও লেখেন, ‘আমি স্পষ্টভাএদিকে যুক্তরাজ্যের লেবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিক পরিকল্পনা অনুযায়ী চ্যান্সেলর র‌্যাচেল রিভসের নেতৃত্বাধীন ট্রেজারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চলতি সপ্তাহে চীনে সফরে যাবেন না।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিংস ক্রসের কাছে দুই বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট ও হ্যাম্পস্টেডে একটি বাড়িসহ বেশ কয়েকটি সম্পত্তি নিয়ে চাপের মধ্যে আছেন টিউলিপ।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি এক লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ডে কিনেছিলেন আবদুল মোতালিফ। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল এই ব্যবসায়ীর। তবে ২০০৪ সালে বিনামূল্যে ওই ফ্ল্যাটের মালিক বনে যান টিউলিপ।

সানডে টাইমস বলছে, এর আগে টিউলিপ সিদ্দিক তাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মা কিনেছিলেন এবং উপহার হিসেবে তাকে দেন। এভাবে তিনি পত্রিকাটিকে বিভ্রান্ত করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

সানডে টাইমস তখন রিপোর্ট করেছিল, তিনি হ্যাম্পস্টেডের আলাদা সম্পত্তিতে বসবাস করছিলেন। ওই সম্পত্তি কিনেছিলেন মঈন গনি এবং টিউলিপ সিদ্দিকির বোনকে দিয়েছিলেন। পেশায় আইনজীবী মঈন গনির সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকারের সংশ্লিষ্টতা ছিল।

এছাড়া তিনি পূর্ব ফিঞ্চলে আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল করিমের দুই দশমিক এক মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।বে বলছি, কোনো ভুল করিনি। তবে সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই, আপনি স্বাধীনভাবে এগুলো তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করুন।’