৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। এই দিনে জন্মেছিলেন তিনি, মৃত্যুবরণও করেছিলেন এই দিনেই। বেগম রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শ উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর ৯ই ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদযাপন করে এবং বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করে।
পুরো নাম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন হলেও বেগম রোকেয়া নামেই তিনি পরিচিত এবং জনপ্রিয়। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন একজন চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক এবং সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং তাকে বলা হয় প্রথম বাঙালি নারীবাদী। ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’ জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া।
এই মহীয়সী নারীর ৮৭তম মৃত্যুদিন ছিল গত ৯ ডিসেম্বর। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর, মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন।
বাংলাদেশের ৭ম বিভাগ হিসেবে রংপুর বিভাগের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ ৮ অক্টোবর ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ২০০৯ সালে ‘নারী জাগরণের অগ্রদূত’ হিসেবে তার নামকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করেন । উল্লেখ্য , নারীর নামে বাংলাদেশে প্রথম কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি-ই।
এছাড়াও, মহিয়সী বাঙালি নারী হিসেবে বেগম রোকেয়ার অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য “রোকেয়া হল” নামকরণ করা হয়।
১৯৮০ সালে বেগম রোকেয়ার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ দুটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল।
তার ১৩৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুগল তাদের হোমপেজে বেগম রোকেয়ার গুগল ডুডল প্রদর্শন করে তার জন্মদিন উদযাপন করে। গুগল ডুডলটিতে দেখা যায় সাদা পোশাকে চশমা পরা বেগম রোকেয়া বই হাতে হেঁটে যাচ্ছেন।
এবার বেগম রোকেয়া পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন পাঁচ নারী। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৯ ডিসেম্বর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুননেসা ইন্দিরা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সচিব কামরুননাহার।
পদকপ্রাপ্তরা হলেন-নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণে বেগম সেলিনা খালেক; নারীশিক্ষায় অধ্যক্ষ শামসুন নাহার; নারীশিক্ষা, নারীর অধিকার ও নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ড. নুরুননাহার ফয়জননেসা (মরণোত্তর); নারী অধিকারে পাপড়ি বসু এবং নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য বেগম আখতার জাহান।