লেবাননের বৈরুতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১১০ জন সদস্য শান্তিরক্ষা মেডেলে ভূষিত হয়েছেন।
ইউনাইটেড ন্যাশন্স ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবাননের (ইউনিফিল) মেরিটাইম টাস্কফোর্স (এমটিএফ) কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আন্দ্রেস মুগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’-এর কর্মকর্তা ও নাবিকদের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ এ মেডেল তুলে দেন।
আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের বৈরুতে মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে লেবানন নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ ক্যাপ্টেন কমোডর হাইসাম ড্যাননোই ও লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান, বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদরদপ্তরের প্রতিনিধি কমোডর সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
মেডেল প্যারেড অনুষ্ঠানে এমটিএফ কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আন্দ্রেস মুগে শান্তিরক্ষা মিশন লেবাননে নিয়োজিত সব নৌবাহিনীর সদস্যেকে সফলভাবে মিশন কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া তিনি সব নৌসদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রমে স্বার্থক এবং নিবেদিতভাবে অবদান রাখার জন্য সাধুবাদ জানান। তিনি বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে সবাইকে বিশেষ স্বাস্থ্য সচেতনতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করেন।
জাতিসংঘের ম্যানডেট অনুযায়ী, ইউনিফিলে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাফল্যের ধারাবাহিকতার জন্য তিনি নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে। ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টি ন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে।
বর্তমানে নিয়োজিত ‘সংগ্রাম’ যুদ্ধজাহাজ লেবাননের ভূখণ্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি জাহাজটি লেবাননের জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন পরিচালনা, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানন নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ করে যাচ্ছে।
লেবাননে মোতায়েনের পর থেকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় গত ১১ বছর ধরে নৌসদস্যরা অত্যন্ত আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে চলেছে। নৌবাহিনীর এ গর্বিত অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম বৃদ্ধি করেছে।