ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে চিঠি দেওয়া হবে। তাদের সঙ্গে আগামী শনিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠকে বসবে সার্চ কমিটি।
এছাড়া বিএনপিসহ নিববন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকেও ১০ জন করে তাদের পছন্দের নাম জমা দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে।
শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই দলগুলো আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যদের নামের তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সরসারি বা বা ইমেইলে (gfp_sec@cabinet.gov.bd) এই পাঠাতে পারবেন। একইভাবে যোগ্যদের নামের তালিকা পাঠাতে পারবেন দেশের যেকোনো নাগরিকও।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত সার্চ কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিতে বৈঠকে অংশ নেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এছাড়াও সাচিবিক সহায়তায় ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এদিন বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষে সার্চ কমিটি ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের নাম চূড়ান্ত করেছে। এখানে আরও ২-৪ জন বাদ বা যুক্ত হতে পারেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন এই তালিকায় আছেন। কমিটি থেকে বুধবারের মধ্যে এই বিশিষ্ট নাগরিককে চিঠি বা ইমেইল পাঠানো হবে। এরপর তাদের সঙ্গে আগামী শনিবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা এবং দুপুর পৌনে ১টা থেকে সোয়া দুইটা পর্যন্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। রোববারও আমরা বৈঠকে বসব। আশা করছি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যে দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশন ও কমিশনার পদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ নাগরিকের নামের তালিকা গ্রহণের সুবিধার্থে শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
সার্চ কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটি সার্চ কমিটিকে জানানো হবে। তবে সার্চ কমিটির ভূমিকা নো কেশ্চেয়েনবল।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে একটি তালিকা পাঠানোর কথা জানিয়েছেন।
এই তালিকা নিয়ে সার্চ কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটি অন্যান্য প্রস্তাব পাওয়ার পরে দেখা হবে। আমরা আজকের বৈঠকে শুধু কার্যসূচি এবং চিঠি দেওয়ার জন্য বিশিষ্টজনদের নাম চূড়ান্ত করেছি।’
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে,অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটিকে ১৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ১৪ ফেব্রুয়ারির আগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে কি-না,এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটি আইনগত বিষয়। শুন্য থাকতে বাধা আছে কি-না সেটিও পর্যালোচনা করা হবে।’
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন।