৩১ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে গণপরিবহন চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু আন্তঃনগর ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করেছে রেল বিভাগ। প্রথম ধাপে ৩১ মে থেকে ১৬টি ও দ্বিতীয় ধাপে ৩ মে থেকে ১৮টি মিলিয়ে ৩৪টি ট্রেন যাত্রী পরিবহন করবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতার কারণে যাত্রী ধারণাক্ষমতার অর্ধেক নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মহাপরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, দুটি গ্রুপে ভাগ করে রেলওয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর চিন্তা করছে। ‘ক’ গ্রুপের ৮ জোড়া বা ১৬টি ট্রেনের (৩১ মে থেকে চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে)। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ এক্সপ্রেস (৭০১/৭০২) ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (৭৮৭/৭৮৮), ঢাকা-সিলেট রুটের কালনী এক্সপ্রেস (৭৭৩/৭৭৪), ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটের পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (৭৯৩/৭৯৪), ঢাকা-রাজশাহী রুটের বনলতা এক্সপ্রেস (৭৯১/৭৯২), ঢাকা-লালমনিরহাট রুটের লালমনি এক্সপ্রেস (৭৫১/৭৫২), চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস (৭২৩/৭২০) এবং ঢাকা-খুলনা রুটের চিত্রা এক্সপ্রেস (৭৬৩/৭৬৪) ট্রেনগুলো রয়েছে।
গ্রুপ ‘খ’ এর ট্রেনগুলো চলাচল করতে পারে ৩ জুন থেকে। এই সময়ে পূর্বাাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল রেলের ৯ জোড়া বা ১৮টি ট্রেন চালানো হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটের তিস্তা এক্সপ্রেস (৭০৭/৭০৮), ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস (৭৯৫/৭৯৬), ঢাকা-চিলাহাটি রুটের নীলসাগর এক্সপ্রেস (৭৬৫/৭৬৬), খুলনা-চিলাহাটি রুটের রূপসা এক্সপ্রেস (৭২৭/৭২৮), খুলনা-রাজশাহী রুটের কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস (৭১৫/৭১৬), রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাট রুটের মধুমতি এক্সপ্রেস (৭৫৫/৭৫৬), চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের মেঘনা এক্সপ্রেস (৭২৯/৭৩০), ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটের কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস (৭৮১/৭৮২) এবং ঢাকা-নোয়াখালী রুটের উপকূল এক্সপ্রেস (৭১১/৭১২) ট্রেনগুলো।
জানা যায়, সাধারণ ছুটি আর বর্ধিত না করে চলাচলে বিধিনিষেধের সময় বর্ধিত করার প্রজ্ঞাপন জারির পর আজ রেলভবন থেকে সীমিত পরিসরে ট্রেন চালানোর একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। প্রস্তাবনার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণ ছুটি তুলে দেয়ার পর সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা এলে নিম্নলিখিত ট্রেনগুলো ধাপে ধাপে চালু করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আগামী শনিবার রেলপথ মন্ত্রীর সঙ্গে রেলওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের পর রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকা ট্রেন চলাচল শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (সিওপিএস) কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মোখিক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর জন্য আমরা বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এক্ষেত্রে ঠিক কোন কোন ট্রেন চলবে সেটি শনিবার রেলভবনে বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিকভাবে বলা সম্ভব হবে। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রতিটি ট্রেনে দূরত্ব বজায় রাখতে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন, অনলাইনে টিকিট বিক্রিতে অগ্রাধিকার ছাড়াও স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।