২০ বছর আগে বাবা ধীরুভাই আম্বানির প্রয়াণের সময় মুকেশ আম্বানির বয়স ছিল পঁয়তাল্লিশ। সেই সময় তিনি ও তাঁর ভাই রিলায়েন্স সাম্রাজ্যের অধিশ্বর হন। তিনি হন কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর। ভাই অনীল আম্বানি হন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এরপর দুই ভাইয়ের বিবাদ, সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাতৃবধূ নীতা ও টিনার সংঘাত সামনে আসে। ধীরুভাইয়ের বিধবা, মুকেশ-অনিলের মা কোকিলাবেনের উপস্থিতিতে সম্পত্তির ভাগ হয়ে যায়। মুকেশ পান রিলায়েন্সের গ্যাস, তেল পেট্রোকেমিক্যাল। অনীল পান টেলিকমিউনিকেশন, আর্থিক ইন্সটটিউশন ও এবং অন্যান্য ব্যবসার দায়িত্ব। মুকেশ যখন জন্ম নেন তখন ধীরুভাই ইয়েমেনের আদেনে একটি পেট্রল পাম্পের সামান্য কর্মী। সেখান থেকে দেশে ফিরে ভাগ্য গড়ে তোলেন তিনি।
মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি নেয়ার পর মুকেশ স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য পড়তে গিয়েছিলেন। পড়াশোনা অর্ধ সমাপ্ত রেখেই বাবার ব্যবসায় যোগ দেন মুকেশ। মুকেশের মস্তিষ্ক রিলায়েন্সকে দেশের অগ্রণী সংস্থায় পরিণত করে। ২০০২তে ধীরুভাইয়ের মৃত্যুর পর কোম্পানির দায়িত্ব নেন মুকেশ-অনিল। সম্পত্তি ভাগাভাগির পর মুকেশ যত সমৃদ্ধ হন, অনিল ততই তলিয়ে যেতে থাকেন। অবশেষে দেউলিয়া হন অনিল। মুকেশ তাঁর সম্পত্তি ও ব্যবসা কিনে নিয়ে সেগুলিকে উজ্জ্বল করেন। টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা জিও এনে বিপ্লব সাধিত করে। ২০ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে মুকেশ সম্প্রতি দেশের সব থেকে ধনী ব্যক্তির সম্মানটি হারিয়েছেন গৌতম আদানির কাছে। তাও তিনি এখনও সেরার সেরা। তাঁর বাড়ি আন্টিলা দেখতে এখনও মানুষের ভিড় হয়। তাঁর গাড়ির সংখ্যা প্রায় পাঁচশো। প্রাইভেট জেট আছে দুটি। বাড়িতে নিরামিষ আহার করে থাকেন মুকেশ। সকালের প্রাতরাশ বাড়ির সকলের সঙ্গে বসে খান মুকেশ। রাত নটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। ধীরুভাই আম্বানির বড় ছেলে আজও প্লেন লিভিং আন্ড হাই থিংকিং এ বিশ্বাসী। রিলায়েন্স তাঁর ২০ বছর পূর্তিতে বিশাল অনুষ্ঠান করছে। মুকেশ কিন্তু নির্বিকার। তিনি স্বপ্ন দেখছেন, কি করে ব্যবসা আরও বাড়ানো যায় তার।