রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ডিক্রিতে সই করলেন ভ্লাদিমির পুতিন। সংবিধান সংশোধনের গণভোটে পক্ষে রায় আসার পর তিনি শুক্রবার এই স্বাক্ষর করেন। এ আইন আজ থেকেই কার্যকর হবে। গত বুধবার শেষ হওয়া গণভোটে সংবিধান সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেয় দেশটির ৭৮ শতাংশ নাগরিক। খবর এনডিটিভি ও রয়টার্সের।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, রাশিয়ার মানুষ তাকে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পক্ষে ভোট দিয়ে নিজেদের ঐক্যবদ্ধতা দেখিয়েছে। দেশের মানুষ নিজেদের হৃদয় দিয়ে এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল।
প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন ওই গণভোটকে পুতিনের বিশাল বিজয় হিসেবে উল্লেখ করলেও বিরোধিরা একে অবৈধ নির্বাচন বলে মন্তব্য করেছে। তাদের মতে, আজীবনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যই পুতিন এমন ভোটের আশ্রয় নিয়েছেন।
১ জুলাই ভোটের নির্ধারিত দিন থাকলেও করোনার কারণে আগের সপ্তাহজুড়ে ম্যারাথন ভোট গ্রহণ করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রুশ নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোটের ফলাফলে জানান, মোট ৬৪ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটদান করেছেন। এরমধ্যে সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ৭৭.৯ ভাগ ভোট পড়েছে। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে ২১.৩ শতাংশ।
এ রায়ের ফলে পুতিন সরকার সংবিধান সংশোধন করার অনুমোদন পেলো, যাতে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া হলো। পুতিনের বর্তমান ক্ষমতার মেয়াদ এমনিতেই আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত রয়েছে। এ গণভোটের রায়ের ফলে ছয় বছর করে আরও দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি হয়েছে পুতিনের। আগামী ২০৩৬ সাল পর্যন্ত অনায়াসে ক্ষমতায় থাকছেন ৬৭ বছরের পুতিন। গত ২০ বছর ধরে দেশটির প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন এই নেতা।
নতুন সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবে রয়েছে, সমকামী বিবাহকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, আন্তর্জাতিক আইনের উপর রাশিয়ার আইনের আধিপত্য এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মেয়াদ টানা দু’বার ৬ বছরের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করা।
গণভোটের আগেই রাশিয়ার সংসদে অনায়াসে পাশ হয়ে গিয়েছিল এই সংশোধনী প্রস্তাব। রাজনৈতিক মহলের মতে, সংসদে পাশ হওয়া সত্ত্বেও দেশে নিজের সমর্থন অটুট প্রমাণ করতেই করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও গণভোট আয়োজন করেন পুতিন। এর আগে ১৯৯৩ সালে সংবিধান সংশোধন করার জন্য ভোট করা হয়েছিল।