আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ শীর্ষক সমাবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এই দাবি করেন আখতার।
আখতার হোসেন বলেন, এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়। বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের আয়োজনের ঘোষণা দেয়, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, অবিলম্বে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে।
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। বাংলাদেশের মানুষের অসংখ্য চাওয়া আছে, আগামীর নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন তাদের সেই চাওয়াগুলো পূরণ করতে হবে।
এর আগে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি শুরু হয়। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় এই অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু হয় বিকেল ৪টার দিকে।
এই কর্মসূচি উপলক্ষে সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-জনতা মিছিল আর ব্যানার, পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস, জাস্টিস, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’-এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
বেলা ৩টার আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরপর মঞ্চ থেকে স্লোগান শুরু হয়। বিকেল চারটার দিকে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে একজন শহীদের বাবার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়।
শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেন, ‘আমার ছেলে শাহরিয়ার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় মিরপুর ১০ এ শহীদ হয়েছে। আমাদের কান্না কখনো থামবে না, এই বেদনা শেষ হওয়ার নয়। খুনি হাসিনা ও তার হেমলেট বাহিনী আমাদের ওপর পাখির মতো গুলি চালিয়েছে। আমরা খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই।’
সমাবেশস্থলে পুলিশ, পুলিশের ডগ স্কোয়াড, র্যাব, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।