চিরবিদায় নিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে শনিবার (১৪ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে বাংলা একাডেমিতে কবির প্রথম জানাজা ও জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা হয়। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবির আত্মীয়-স্বজন ও ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা। উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, মাত্র অল্প কিছু কবিতা দিয়েই হেলাল হাফিজ বাংলাভাষার উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। তার অবদান জাতি সবসময় স্মরণ করবে।
কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। কবির মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নেওয়া হবে না বলে জানান কবির বড়ভাই দুলাল এ হাফিজ।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে শাহবাগের সুপার হোম নামে একটি হোস্টেলে ওয়াশরুমে পড়ে মাথায় আঘাত পান হেলাল হাফিজ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি।
লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে মিছিলে, স্লোগানে ।
২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।