হামাস কেন বন্দি ইসরায়েলিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করেছে, জানালেন সিএনএনের সাংবাদিক

সিএনএনের খ্যাতনামা সাংবাদিক ক্রিস্টিয়ান আমানপুর সোমবার এক সরাসরি সম্প্রচারে মন্তব্য করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রশংসা করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিরা হয়তো গাজার সাধারণ মানুষের চেয়েও ভালো আচরণ পেয়েছেন’, কারণ হামাস তাদেরকে বিনিময়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল।

সিএনএনের ‘নিউজ সেন্ট্রাল’ অনুষ্ঠানে আমানপুর বলেন, ‘তাদের সুস্থ হয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে, শারীরিকভাবেও মানসিকভাবেও। এটি তাদের জন্য এক ভয়াবহ দুই বছর ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভবত তাদের সঙ্গে সাধারণ গাজাবাসীর চেয়ে ভালো আচরণ করা হয়েছে, কারণ তারা ছিল হামাসের তাস—বিনিময়ের হাতিয়ার। এখন হামাস সব জিম্মিকে ছেড়ে দিয়ে তাদের সব প্রভাব হারিয়েছে, যা ইসরায়েলের জন্য এক ধরনের জয়।’

এই মন্তব্যটি আসে সোমবার, যখন ৭৩৮ দিন পর গাজা থেকে শেষ ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়।

তবে বক্তব্যটি প্রকাশের পরই আমানপুরকে লক্ষ্য করে ব্যাপক সমালোচনা করেন ইহুদিবাদীরা। চাপের মুখে পরে তিনি নিজের অনুষ্ঠান ‘আমানপুর’ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (টুইটার)-এ এক বিবৃতি দিয়ে বলেন, তার মন্তব্য ছিল ‘সংবেদনহীন ও ভুল’।

বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ‘আজ সত্যিই আনন্দের দিন—যে ইসরাইলি পরিবারগুলো অবশেষে তাদের প্রিয়জনদের দুই বছরের ভয়াবহ বন্দিদশা থেকে ফিরে পেয়েছে, এবং গাজার সাধারণ মানুষও কিছুটা যুদ্ধবিরতির স্বস্তি পেয়েছে। আমি বলেছিলাম, এই জিম্মিদের সুস্থ হয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে। তবে আমি দুঃখিত যে বলেছিলাম তারা হয়তো অনেক গাজাবাসীর চেয়ে ভালো আচরণ পেয়েছে—এটি ভুল ছিল।’

আমানপুর আরও জানান, তিনি ‘অনেক সাবেক জিম্মি ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন’ এবং তাদের অভিজ্ঞতা ‘ভয়াবহ’ ছিল।

তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে জানিয়েছেন কিভাবে তারা সুড়ঙ্গের ভেতর শ্বাস নিতে পারতেন না, কাঁদতে দিত না, খাবার পেতেন না, এমনকি নিজেদের কবর খুঁড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। আজও কেউ কেউ মরদেহ হয়ে ফিরছেন।’

এটি প্রথম নয় যে আমানপুর ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে মন্তব্য করে ইসরায়েলিদের তোপের মুখে পড়েছেন। এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর তিনি জর্ডানের রানি রানিয়ার মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, ‘বিশ্ব ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি দ্বৈত মানদণ্ডে আচরণ করছে।’

তিনি তখন নিজের প্রতিষ্ঠান সিএনএন-এর সংবাদ কাভারেজকেও সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন- নেটওয়ার্কটি ইসরায়েলপন্থি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংবাদ প্রচার করছে এবং আরও সাংবাদিককে গাজার ভেতর থেকে প্রতিবেদন করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন।