হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার গাছগুড়ি। এ স্থানটা হাওর। বর্ষায় এখানে কয়েক মাস পানি থাকে। বাকি সময় এখানের প্রায় ৭ একর জমিতে নাগা মরিচসহ নানা ধরনের সবজি চাষ হয়। চাষ করছেন উপজেলার কাজী মহল্লার বাসিন্দা এলামুল হক। ৫ বছর ধরে নাগা মরিচসহ অন্যান্য সবজি চাষ করে প্রতি মৌসুমে তিনি প্রায় ৫০ লাখ টাকা পান। এর মধ্যে চাষে ২০ লাখ টাকা খরচ হয়। এখানে লাভ হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা।
সরেজমিন আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়ে চাষি এনামুল হক বলেন, তিনি বাজার থেকে ১টি নাগা মরিচ কেনেন। মরিচটির বীজ রোদে শুকিয়ে মাটিতে রোপণ করেন। এতে ৬টি মরিচের গাছ হয়। পর্যায়ক্রমে ওই ৬টি গাছ থেকে আজ প্রায় ২৪ হাজার গাছ থেকে দৈনিক প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ কেজি নাগা মরিচ সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। নাগা মরিচের পাশাপাশি তিনি নানা ধরনের সবজিও উৎপাদন করে বিক্রি করছেন। উৎপাদিত মরিচ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাওর ভেদ করে যাওয়া মেঠোপথের ধারে এক টুকরো সবুজের সমারোহ। কাছে গেলে চোখে পড়ে বুকসমান উঁচু হাজারো গাছে ঝুলছে সবুজ আর লাল নাগা মরিচ। চোখ ও নাক ছুঁয়ে যায় ঝাঝ আর ঝাঝালো গন্ধে। প্রতিটি গাছে একশ’র বেশি মরিচ রয়েছে। প্রতি কেজি মরিচ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। গাছগুলো বারোমাসি হওয়ায় শুকনো মৌসুমের পুরোটাজুড়েই উৎপাদন অব্যাহত থাকে। হাওরে নাগা মরিচ চাষে এনামুল হকের চমক দেখে অন্যান্য চাষিরাও উৎসাহিত হয়েছেন। তারাও নাগা মরিচ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জমি দেখতে যাওয়া চিকিৎসক মঈনুল হাসান শাকীল বলেন, পাহাড়ি এলাকায় চাষ হওয়া সবজির নাম নাগা মরিচ। এনামুলের পুরোটাই বোরো জমি। এ জমিতে মরিচের এত ভাল ফলন যেন অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো কাজ।
এরকম একটি সম্ভাবনাময় আবাদে সরকারের কৃষি অধিদপ্তর সহযোগিতা করে কি না জানতে চাইলে চাষি এনামুল বলেন, কর্মকর্তারা এসে পরিদর্শন করে চলে যান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার আশেক পারভেজ বলেন, পাহাড়ি এলাকার লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে নাগা মরিচের ব্যাপক ফলন হচ্ছে। এখানে কৃষি বিভাগের পরামর্শ পেয়ে হাওরেও নাগা মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।