স্পিকারের আশ্বাসে জাতীয় পার্টি সংসদে ফিরেছে: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, ‘দেশের মানুষ যেন খাঁচায় বন্দি হয়ে আছে। দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে দেশের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’

মঙ্গলবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় যুব সংহতি আয়োজিত আলোচনা সভায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন।

জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচএম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন।

সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, স্পিকারের আশ্বাসে সংসদে ফিরেছে জাতীয় পার্টি। বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনের বিষয়ে স্পিকার সময় চেয়েছেন। সমাধান না হলে আমাদের হাতে বিকল্প অপশন আছে। তিনি বলেন, বিভক্তি সৃষ্টির জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে।

এর আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘সোনার খাঁচায় বন্দি একটি পাখি কখনোই সুখী হতে পারে না। ঠিক তেমনই, অধিকার ছাড়া কোনো দেশের মানুষ ভালো থাকতে পারে না। দেশের মানুষের কোনো অধিকার নেই। দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশের মানুষ চায়, তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ইচ্ছামতো কাউকে ক্ষমতায় বসাবেন। আবার অপছন্দ হলে তাকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবেন।’

‘মানুষের ভোটাধিকার অকার্যকর করা হয়েছে। মানুষ প্রতিবাদ করতে পারছে না, বিক্ষোভ করতে পারছে না। দেশের গণমাধ্যমও অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছা করলেই সঠিক তথ্য প্রকাশ করতে পারছে না গণমাধ্যম। সাধারণ মানুষ হচ্ছেন দেশের মালিক। তাদের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার সংবিধান সংশোধন করে দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। সব ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে। এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা থাকলে কখনোই গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে কোথাও জবাবদিহিতা থাকে না। আর জবাবদিহিতা না থাকলে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি বিস্তার ঘটে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের যুব সমাজকে সংগ্রাম করতে হবে। এজন্য যুব সমাজকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।’

জিএম কাদের বলেন, ‘এ দেশ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়। এ দেশ আমাদের, এ দেশের মালিক সাধারণ মানুষ। দেশের সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

জিএম কাদের দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাজনীতি যেন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। যারা রাজনীতি করবে সব অধিকার যেন তাদের জন্যই। দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কোনো অধিকার নেই। তিনি বলেন, শিক্ষা খাতের বরাদ্দ দিয়ে আধুনিক ভবন তৈরি হচ্ছে, আধুনিক আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থার কোনো উন্নতি নেই।’

সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘দেশে ৫ কোটি বেকার দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। বেকারদের নিয়ে সরকারের কোনো ভাবনা নেই। সরকারি দলের লোকরা বেহেশতে আছেন, তারা বেকারদের কষ্ট বোঝেন না। ব্যবসা, বিদ্যুৎ ও বিদ্যুতের নামে ক্যাপাসিটি চার্জ দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত। দেশের মানুয়ের কষ্ট নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা মানুষের সব অধিকার নিশ্চিত করতেই রাজনীতি করছি।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, নাজমা আখতার এমপি।

উপস্থিত ছিলেন- চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনির আহমেদ, আমিনুল ইসলাম মন্ডল, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব আমির হোসেন ভূইয়া, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু প্রমুখ।

Comments (0)
Add Comment