শেখ হাসিনা ও তার পরিবারে নামে থাকা ১৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবার শেখ হাসিনার নামে থাকা দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ইনস্টিটিউশন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামও পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শুধু শেখ হাসিনা নয়, জুলাই গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামও পরিবর্তন করা হবে। শিক্ষা ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে থাকা সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করবে এবং নাম পরিবর্তনের কারণসহ প্রস্তাবনা পাঠাবে। পরে নীতিমালার আলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে।
গত অক্টোবর মাসে উপদেষ্টা পরিষদে সিদ্ধান্ত হয় যে, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে। একই সঙ্গে তার দলের নেতাদের নামে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর নামও পরিবর্তন করা হবে। সেই আলোকে গত ১২ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদে শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন নামকরণ করা হবে এলাকা ও বাংলাদেশের নাম অনুসারে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার নামও পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, সারাদেশে গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়গুলো। উচ্চ শিক্ষা ও মাধ্যমিক বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। স্ব স্ব দপ্তরগুলো ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে। কোথাও কোথাও ডিসিরাও কাজ শুরু করেছেন। সব শেষ করে মার্চ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতি রয়েছে ডিসিদের।
উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে থাকা সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করবে এবং নাম পরিবর্তনের কারণসহ প্রস্তাবনা পাঠাবে। পরে নীতিমালার আলোকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে।
দপ্তরগুলোর সূত্র মতে, তালিকা করার ক্ষেত্রে পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তার নামে থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের নামও পরিবর্তন করা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকলে সেগুলোর নামও পরিবর্তন করা হবে। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের নেতা, মন্ত্রী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধরা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে বিষয়টি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে তার মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে তালিকা করার জন্য ডিসি ও ইউএনওদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কাজ শুরু করেছে।