বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নগরীর ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর রুটে ঢাকা নগর পরিবহনের আওতায় ২০০ নতুন বাস চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র (ডিএসসিসি) ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৩তম সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে সঙ্গে আলাপকালে কমিটির সভাপতি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এই ঘোষণা দেন।
তাপস বলেন, আমরা নতুন তিনটি যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। এই তিনটি যাত্রাপথেই আমরা আবেদন পেয়েছি। সেই আবেদনগুলোসহ বিআরটিসির আবেদন পর্যালোচনা করেছি। আমরা নতুন তিনটি যাত্রাপথের মধ্যে ২২ নম্বর যাত্রাপথে অভি মোটরসের ২০২২ সালে নির্মিত ৫০টি বাস চালুর প্রস্তাব পেয়েছি। আমরা তাদের আবেদন গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, একইভাবে ২৩ নম্বর যাত্রাপথে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ২০২২ সালে নতুন নির্মিত ১০০টি বাস চালুর আবেদন করেছে। আমরা সেটাও গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২৬ নম্বর যাত্রাপথে বিআরটিসির আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ৫০টি ডাবল ডেকার বাস দিয়ে চালু করা হবে।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আগামী পহেলা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই বাসগুলো নির্মিত হবে, আমাদের সকল অবকাঠামো নির্মাণও সম্পন্ন হবে। আমাদের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যদি সম্মত হন, তাহলে তাকে প্রধান অতিথি করে ১ সেপ্টেম্বর নতুন তিনটি যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করা হবে।
পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে বাস কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ঢাকা নগর পরিবহন ঢাকাবাসীর কাছে সমাদৃত হয়েছে। একটি দুটি বাস কমলো বা বাড়লো সেটা কিন্তু সাফল্যের নির্ণায়ক নয়। সফলতার বিষয় হচ্ছে এই যাত্রাপথটি এখনো চালু রয়েছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রান্স সিলভা তাদের বাসগুলো সরিয়ে নিয়েছে। তারা নতুন আরও ২০টি বাস চালু করার আবেদন করেছিল, কিন্তু আমরা তাদেরকে নতুন করে আর অনুমোদন দিব না। এ ছাড়া জাহান এন্টারপ্রাইজ ২০টি বাস চালুর আবেদন করেছিল এবং সেগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে। সুতরাং সেই বাসগুলো এই যাত্রাপথে আমরা চালু করব।
এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএ এবং ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে আমরা আগামী ১৭ জুলাই হতে ২৮ জুলাই পর্যন্ত যৌথ অভিযান শুরু করব। এই অবৈধ ১৬৪৬টি বাস, যারা বিভিন্নভাবে লুকিয়ে-চুকিয়ে বিভিন্ন যাত্রাপথে চলে, এদেরকে আমরা ঢাকা শহরের যেখানে পাই সেখানেই ব্যবস্থা নেব। শুধু দিনের বেলায়ই নয়, প্রয়োজনে আমরা রাতেও অভিযান পরিচালনা করব। তারা টার্মিনালে রাখলে টার্মিনাল থেকে খুঁজে বের করব, রাস্তায় রাখলে রাস্তার মধ্যে খুঁজে বের করব। কাউন্টার এর পাশে রাখলে কাউন্টারের পাশ থেকে আমরা খুঁজে বের করব। আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এই ১৬৪৬টি বাস জব্দ করব, ধ্বংস করব।
আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট যাত্রাপথগুলোতে যাত্রী ছাউনি, বাস-বে সহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন হবে বলে ডিএসসিসি মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে ২১ নম্বর যাত্রাপথে রুট পারমিটবিহীন ও অবৈধ কোনো বাস চলবে না জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ২১ নম্বর যাত্রাপথ ঘাটারচর হতে কাঁচপুরে – ঢাকা নগর পরিবহন ছাড়া অন্য কোনো বাস চলবে না। এই যাত্রাপথে শুধু ঢাকা নগর পরিবহনই চলবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান মিয়া, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
২২ নম্বর রুট
ঘাটারচর-ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর টাউন হল-আসাদ গেট-ফার্মগেট কাওরানবাজার-শাহবাগ-কাকরাইল ফকিরাপুল-মতিঝিল-টিকাটুলি-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-কোনাপাড়া-ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার।
২৩ নম্বর রুট
ঘাটারচর- ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর-জাপান গার্ডেন সিটি-শ্যামলী-কলেজ গেট-আসাদ গেট-কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-মৎস্য ভবন-প্রেসক্লাব-গুলিস্তান (জিরো পয়েন্ট)- দৈনিক বাংলা-রাজার বাগ-কমলাপুর-ধলপুর-যাত্রাবাড়ী-শনির আখরা রায়েরবাগ-মাতুয়াইল-সাইনবোর্ড-চিটাগং রোড।
২৬ নম্বর রুট
ঘাটারচর-ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর-টাউন হল-আসাদ গেট-কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-নিউ মার্কেট-আজিমপুর-পলাশী-চাঁনখারপুল-ফ্লাইওভার হয়ে-পোস্তগোলা কদমতলী।