সেই লাশটি হারিছ চৌধুরীর,রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ

মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর ডিএনএ মিলেছে

ঢাকার সাভারে ২০২১ সালে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা মরদেহটি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর। তার সঙ্গে মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর ডিএনএ মিলেছে। এখন পরিবারে পছন্দমতো কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করতে বলা হয়েছে। বুধবার(৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।

এর আগে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। সাভারের একটি মাদ্রাসার কবরে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে সমাহিত হারিছ চৌধুরীর লাশ তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হারিছ চৌধুরীর প্রকৃত পরিচয় শনাক্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচালককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

নির্দেশ অনুসারে, সাভারে ২০২১ সালে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে দাফন করা লাশটি গত ১৬ অক্টোবর কবর থেকে তোলা হয়। লাশটি উত্তোলন করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা। হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে ইতিবাচক ফল আসে, যার মধ্য দিয়ে হারিছ চৌধুরীর প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হয়।

রিট আবেদনে প্রার্থনা ছিল, সাভারের মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে হারিছ চৌধুরীর অবশিষ্ট (মরদেহের) যা আছে, তা তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করে তার প্রকৃত পরিচয় নির্ধারণ। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্য সম্মানসহ নিজ বাড়িতে দাফন করা।

আগের ধারাবাহিকতায় বুধবার বিষয়টি আদালতে ওঠে। রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইছা।

পরে আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী বলেন, হারিছ চৌধুরীর মেয়ের সঙ্গে ডিএনএ মিলেছে। অর্থাৎ, মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী। লাশ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযথ সম্মান দিয়ে তাঁকে তাঁর পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

হারিছ চৌধুরী বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে যান। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সটকে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন।

Comments (0)
Add Comment