ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাকচাপায় মা-বাবা-বোন হারানো সেই নবজাতক ও তার দুই শিশু ভাই-বোনের সহায়তায় ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। সোমবার ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবজাতকের দুই ভাই-বোন ও দাদাকে সোনালী ব্যাংক ত্রিশাল শাখায় নিয়ে একটি হিসাব খুলে দিয়েছেন। এতিম তিন শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের দাদা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যৌথভাবে এটি পরিচালনা করবেন।
এদিকে ময়মনসিংহের বেসরকারি লাবিব হাসপাতালে চিকিত্সাধীন নবজাতককে এখন চার প্রসূতি পর্যায়ক্রমে দুধ পান করাচ্ছেন। হাসপাতালের পরিচালক মো. শাহ জাহান জানান, শিশুটি সুস্থ আছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা চার প্রসূতি আগ্রহ নিয়েই নিজের সন্তানের পাশাপাশি নিয়ম করে এই নবজাতককে দুধ পান করাচ্ছেন।
তবে গতকাল পর্যন্ত শিশুটির নাম রাখা হয়নি। পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে আকিকা দিয়ে নাম রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের পরিচালক মো. শাহ জাহান।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, এতিম তিন শিশুকে যারা সহায়তা করতে চায় তাদের সুবিধার্থে একটি হিসাব খোলা হয়েছে। আগ্রহীরা এই অ্যাকাউন্টে (রত্না আক্তার রহিমা এর নবজাতক ও অন্য দুই সন্তানের সহায়তা, হিসাব নম্বর ৩৩২৪১০১০২৮৭২৮, সোনালী ব্যাংক, ত্রিশাল শাখা) সহযোগিতা করতে পারবেন। জেলা প্রশাসক এনামুল হকের নির্দেশে এই হিসাব খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু ও মা সুফিয়া আক্তার দুজনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জাহাঙ্গীর-রত্না দম্পতির বেঁচে যাওয়া ওই নবজাতক ছাড়াও ১০ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাত ও সাত বছর বয়সী ছেলে এবাদত রয়েছে। দাদা-দাদি দুজনই শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় এই তিন শিশুর ভরণ-পোষণ করা তাঁদের জন্য কঠিন।
গত শনিবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না (৩২), তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর (৪০) এবং তাঁদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। তবে মৃত্যুর আগে রত্নার প্রসব হয়ে যাওয়া বেঁচে যায় গর্ভের সন্তান।