মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে গতকাল রবিবার ভোট নেওয়া হয়েছে। ভোট নেওয়ার পরপরই শুরু হয়েছে গণনা। ধারণা করা হচ্ছে, অং সান সু চির সরকারই পুনরায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবে।
রোহিঙ্গা সংকটের জেরে বহির্বিশ্বে সু চির ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হলেও দেশে তিনি এখনো সমান জনপ্রিয়।
দক্ষিণ-পূর্ব এ দেশটিতে এটি দ্বিতীয় নির্বাচন। প্রায় ৫০ বছর সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটিতে ২০১৬ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ভূমিধস বিজয় পায়। এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলেই অধিকাংশ পর্যবেক্ষক মনে করেন।
তবে মিয়ানমারকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের এখনো অনেক পথ যেতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। দেশটিতে সেনাবাহিনী এখনো ব্যাপক ক্ষমতাধর। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়সহ পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন তাদের জন্য বরাদ্দ।
করোনা মহামারিতে ভোটারদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে সামাজিক দূরত্ব সেভাবে সব জায়গায় মানা হয়নি।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গত শুক্রবার ‘শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক ও গ্রহণযোগ্য’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান। তবে এর গ্রহণযোগ্যতা এরই মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ। দেশটিতে এখনো ছয় লাখ রোহিঙ্গা থাকলেও তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। এই জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই প্রাপ্তবয়স্ক।
মানবাধিকার সংস্থা বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে এ নির্বাচনকে ‘বর্ণবাদী নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছে। পাশাপাশি গতবারের চেয়ে এবার নির্বাচন ‘কম অবাধ ও সুষ্ঠু’ হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে দেশটির ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। ফলে সব মিলিয়ে তিন কোটি ৭০ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ২০ লাখকেই ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। সে সময় বহু রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয় এবং তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে। যদিও সু চি ও তাঁর সরকার বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সূত্র : এএফপি।