যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ (নিম্নকক্ষ) ও সিনেটের (উচ্চকক্ষ) নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান দলের মধ্যে শেষ পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে।
ওই নির্বাচনে বহু বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনে বিজয়ী চার বাংলাদেশির মধ্যে জর্জিয়া স্টেট সিনেটর শেখ রহমান ও নাবিলা ইসলাম, কানেক্টিকাট স্টেট সিনেটর মো. মাসুদুর রহমান রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। অন্যদিকে, নিউ হ্যাম্পশায়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস পদে টানা পঞ্চমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী আবুল খান।
নাবিলা ইসলাম জর্জিয়া স্টেট সিনেটে প্রথমবার নির্বাচন করেই জয়ী হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। গুয়েনেট কাউন্টিতে বেড়ে ওঠা নাবিলার জন্ম বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়া শ্রমজীবী অভিবাসী পরিবারে। গুয়েনেট কাউন্টি পাবলিক স্কুলের স্নাতক নাবিলা লাগেজ স্টোরে কাজ করে জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির কলেজে ভর্তি হন। টেবিলে খাবার পাওয়ার আগে নাবিলা তার বাবা-মাকে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে দেখেছেন। তিনি যখন হাইস্কুলে ছিলেন, তখন তার মা এক গুদামে অর্ডার নেওয়ার কাজ করতেন। একদিন তার মা সেখানে আহত হন।
নাবিলার ওয়েবসাইট জানাচ্ছেঃ জীবন সংগ্রামে বেড়ে ওঠা নাবিলা ২০২০ সালে গুয়েনেট ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছিলেন। এর আগে নাবিলা ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করেছিলেন।
নাবিলার নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘নাবিলা ফর জর্জিয়া’ নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পেইজ খোলা হয়েছিল। ওই পেইজটিকে ফলো করছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভেরিফাইড পেইজ। এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাবিলার পেইজটি থেকে তার পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছিল।
নাবিলা সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার পর অনেকেই দ্বিধান্বিত ছিলেন নাবিলার নামের শেষে সত্যিই ‘ইসলাম’ রয়েছে কিনা তা নিয়ে। বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন তিনি নিজেই। গত ১২ নভেম্বর ওই পেইজ থেকে লেখা হয়েছেঃ “যারা জানতে চাইছিলেন, আমার নামের শেষে সত্যিই ইসলাম কিনা। (তাদের বলছি) হ্যাঁ এটাই আমার নাম। সিনেটর-ইলেক্ট (নির্বাচিত) ইসলাম।”