তুমুল গণবিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালানো শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে মালদ্বীপ ত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের একটি বিমানে করে দ্বীপরাষ্ট্রটি ছাড়েন তিনি।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
মালদ্বীপের একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে মালদ্বীপে একটি সৌদি বিমানে চড়েছেন। এই বিমানটি প্রথমে তাকে সিঙ্গাপুর এবং পরে সেখান থেকে তাকে সৌদি আরবের জেদ্দায় নিয়ে যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তবে গোতাবায়ার চূড়ান্ত গন্তব্য কোনটি সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সরকারের অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কটে নিমজ্জিত শ্রীলংকায় গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছিল।বুধবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় দখল করে নেন বিক্ষোভকারীরা।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণ-আন্দোলনের মুখে গত মঙ্গলবার রাতে একটি সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান গোতাবায়া। গোতাবায়া মালদ্বীপে গেলে সে দেশে বসবাসরত শ্রীলঙ্কার বাসিন্দারা বিক্ষোভ করেন। তাকে মালদ্বীপে আশ্রয় না দেওয়ার দাবি জানান তারা।
মালদ্বীপের সাধারণ লোকজনও দেশটির সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গোতাবায়াকে আশ্রয় দেওয়ায় মালদ্বীপের রাজনৈতিক দলগুলো দেশটির সরকারের কঠোর সমালোচনা করে।
গতকাল বুধবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি পদত্যাগ না করেই আগের রাতে দেশ ছেড়ে পালান। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেননি।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বুধবার রাতে মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা ছিল গোতাবায়ার। নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগ থেকে তিনি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ওঠা থেকে বিরত থাকেন।
গোতাবায়ার চাওয়া ছিল প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে বিক্ষোভ সামাল দেবেন।
পার্লামেন্ট স্পিকারকে ফোন করে কালই পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোতাবায়া।
এদিকে বুধবার শ্রীলংকায় সর্বদলীয় নেতাদের বৈঠকে স্পিকারকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট করার প্রস্তাব পাশ হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, তার দল ও বিরোধী দল মিলে সর্বদলীয় সরকার গঠন করবে।
রনিল বিক্রমাসিংহে স্পিকার মাহিন্দ ইয়াপে নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই করতে বলেছেন, যিনি সরকারি দল ও বিরোধী দলের কাছে গ্রহণযোগ্য।