সাংবাদিকরাও সার্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা পেনশনের দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সার্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সমাজের সব মানুষ এই পেনশন সুবিধার আওতায় আসবে, সাংবাদিকরাও আসবে। সাংবাদিকরা এর আওতায় আসার ক্ষেত্রে প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের একটি দায়দায়িত্ব আছে এবং থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন একটি যুগান্তকারী ব্যবস্থার ঘোষণা যা ইউরোপীয় সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে রয়েছে। কিন্তু পত্রিকার পাতায় দেখলাম বিএনপি নেতারা সেটি নিয়েও সমালোচনা করছে।’
সবকিছুতে ‘না’ বলার অভ্যাস থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে সবকিছু নিয়ে সমালোচনা করার বাতিক থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারেনি। সবকিছুতে ‘না’ বলা বিএনপি, যারা এই কল্যাণমূলক প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করছে, আশা করি তারা ‘না’ রোগ থেকে মুক্তি পাবে।’
ফলো করুন-
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটিতে আপনাদের কোনো ‘সাজেশন’ থাকলে বলুন। সেই পরিকল্পনা যখন প্রকাশ করা হবে সেখানে কোনো ভালো ‘সাজেশন’ থাকলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এরকম একটি ভালো উদ্যোগের কেন সমালোচনা করছেন? সবকিছুতেই না বলার যে বাতিক, সেটাই তাদেরকে পেয়ে বসেছে, তা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। আশা করবো, তারা এই না বলা রোগ থেকে মুক্তি পাক।’
সাংবাদিকরা মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে পারে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন এবং হুমকির সম্মুখিন হয়েও সমাজে অবহেলিত, উপেক্ষিত মানুষকে নিয়ে লেখেন, আমি তাদেরকে ‘স্যালুট’ জানাই। কারণ এ ধরণের রিপোর্ট দরকার। এ ধরণের রিপোর্ট সমাজকে পথ দেখায় এবং দায়িত্বশীলদের আরো দায়িত্ববান হতে তাগাদা দেয়। গণমাধ্যমে আজকে যে অগ্রগতি সেটি এবং কোনো অসংগতি থাকতে সেটিও তুলে ধরুন। সরকার সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করে।’
‘গণমাধ্যম জগতে বিরাজমান কয়েক দশকের পুঞ্জিভূত বিশৃঙ্খলা দূর করে ধীরে ধীরে শৃঙ্খলা আনতে আমার চেষ্টায় অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’, বলেন সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ক্যাবল অপারেটররা টেলিভিশন মালিকের কাছে দাবি করতো যে বেশি টাকা না দিলে সিরিয়াল যাবে পঞ্চাশে, টাকা দিলে সিরিয়াল যাবে পাঁচে। সেখানে সিরিয়াল ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এখন টেলিভিশন মালিকদের আর অপারেটরদের দারস্থ হতে হয় না। বিদেশি মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন চলে যাওয়া বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকেই মনে করেছে বিদেশি টিভি’র ক্লিনফিড বা বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার কখনোই সম্ভব না, সেটি আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। সংবাদপত্রে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনেকে বাস্তবায়ন করেছে আবার অনেকেই করে নাই। নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ব্যাপারে সাংবাদিক ইউনিয়ন সোচ্চার আছে। আমি মনে করি যে সবার নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা উচিত। আমরা এ নিয়ে কাজ করবো।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, তথ্য কমিশন গঠিত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন সাংবাদিকবান্ধব নেতা ছিলেন। আজ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সমস্ত সাংবাদিক সাহায্য পাচ্ছে, অনুদান পাচ্ছে, এক্ষেত্রে কে কোন দলের কে কোন মতের সেটি দেখা হচ্ছে না। যারা সরকারের সমালোচনা করেন তারাও সাহায্য পাচ্ছেন। করোনাকালে দেশের সকল অঞ্চলের সাংবাদিকরা সহায়তা পেয়েছে।’
সাংবাদিকদের ছেলেমেয়েরাও যাতে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা পায় এজন্য নীতিমালা হচ্ছে এবং সেই নীতিমালা খুব সহসাই চূড়ান্ত হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।