করোনাভাইরাসের কারণে অধিকাংশ অফিস বন্ধ থাকলেও সীমিত আকারে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। এ সময়ে ঝুঁকি নিয়ে যেসব কর্মকর্তা অফিস করছেন তারা পাবেন বাড়তি ভাতা। সাধারণ ছুটি শুরুর পর কেউ ১০ দিন অফিস করলেই তাকে বাড়তি এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে। ১০ দিনের কম উপস্থিতি হলে সে ক্ষেত্রেও আনুপাতিক হারে তিনি ভাতা পাবেন।
সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, সাধারণ ছুটির মধ্যে সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা রাখা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন নির্দেশনায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। আগতরা যেন দূরত্ব বজায় রাখেন সে জন্য প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে। এরপরও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছু সংখ্যক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরকম অবস্থায় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও ব্যাংকিং খাতকে সচল রাখতে যারা তাদের জীবন ও পরিবারকে ঝুঁকিতে রেখে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের স্বীকৃতি হিসেবে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, সাধারণ ছুটির মধ্যে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তারা বিশেষ প্রণোদনা ভাতা পাবেন। সাধারণ ছুটি শুরুর পর থেকে মাস গণনা শুরু হবে। প্রতি ৩০ দিন অতিক্রম করার পর নতুন মাস হিসেব হবে। এভাবে সাধারণ ছুটি শুরুর পর এক মাসে কেউ কমপক্ষে ১০ কার্যদিবস স্বশরীরে উপস্থিত থাকলে পূর্ণ মাস হিসেবে গণ্য করে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ভাতা দিতে হবে। উপস্থিতির হার ১০ কার্যদিবসের কম হলে সে ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে উক্ত ভাতা পাবেন। অবশ্য এক মাসে কেউ ১০ দিনের বেশি উপস্থিত হলেও তিনি এক মাসের সমপরিমাণ মূল বেতন পাবেন। ব্যাংকের স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন। যেসব অস্থায়ী বা চুক্তি ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মূল বেতন আলাদাভাবে নির্ধারিত নেই তারা মাসিক মোট বেতন-ভাতার ৬৫ শতাংশ মাসিক বিশেষ প্রণোদনা ভাতা হিসেবে পাবেন। তবে কোনো ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনা ভাতার পরিমাণ মাসিক সর্বনিন্ম ৩০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার বেশি হবে না।
এর আগে ১২ এপ্রিল রোববার ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নির্বাহী কমিটির এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দায়িত্ব পালনের সময় কেউ অসুস্থ হলে অসুস্থতা বা করোনা সংক্রমণ হলে তার সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। করোনায় সংক্রমণ হয়ে কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হবে।