কালক্ষেপণ না করে আগামী ২ মার্চের মধ্যে সাগর-রুনি হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত খুনিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। অন্যথায় সব সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বয়ে উল্লেখিত তারিখের পর কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলেও স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য মাছরাঙা টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের এখনো শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ ১৩ বছর পেরিয়ে গেছে; তদন্তের কোনো ধরনের অগ্রগতি নেই। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত থেকে ১১৫ বার সময় নেওয়া হয়েছে। বিচার না পেয়ে সাগর-রুনির পরিবারে ও গোটা সাংবাদিক সমাজে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। মেহেরুন রুনির মা নুরুন্নাহার মির্জা মৃত্যুবরণ করলেও এখনো বিচারের আশা ছাড়েননি সাগর সারওয়ারের বয়োবৃদ্ধ মা সালেহা মুনির ও সাগর-রুনির একমাত্র পুত্র মাহীর সারওয়ার মেঘ।
লিপিতে আরো বলা হয়েছে, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তরের আগের ছয় বছর কার্যত কোনো তদন্ত হয়নি। এ সময় তদন্তকারী সংস্থা র্যাব আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া নিয়ে কেবল সময়ই চেয়েছে। এর আগের ছয় বছর, অর্থাৎ ২০১২-১৮ পর্যন্ত র্যাবের তদন্তের ফল ছিল ‘শূন্য’। এ মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিগত সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন অভিমত দিয়েছেন।
এছাড়া যে কোনো হত্যার বিচার পাওয়া নাগরিক অধিকার। আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেই অধিকার নিশ্চিত করা। আমরা দেখেছি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বড় বড় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করেছে। তবে সাগর-রুনি হত্যার কূলকিনারা তারা করতে পারবে না এটা অবিশ্বাস্য। তাই আর কালক্ষেপণ না করে আগামী ২ মার্চের মধ্যে দ্রুততম সময়ে সাগর-রুনি হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত খুনিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সকল সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বয়ে উল্লেখিত তারিখের পর কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।