বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজকের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর হচ্ছে, খুলনা বিভাগে আজকে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, ২৪ জন লোক মারা গেছেন, রংপুর বিভাগে প্রায় ১৯ জন লোক মারা গেছেন। এটি সরকারি পরিসংখ্যান। বেসরকারি পরিসংখ্যান আরও বেশি। যদি একটা বিভাগে একদিনে লক্ষাধিক মানুষ সংক্রমিত হয়, তাহলে সারা দেশের কী অবস্থা?একটা ভয়ংকর মৃত্যুপুরীর ভেতরে বাংলাদেশকে নিপতিত করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বিএনপির উদ্যোগে করোনা হেল্প সেন্টার উদ্বোধন ও সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সেলিম ও সদস্য রাশেদুল হকের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান, ডা. মাজহারুল ইসলাম, শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।
এতে রুহুল কবির রিজভী বলেন,মন্ত্রীরা গলাবাজি করছেন । মন্ত্রীদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে যে, এ ব্যাপারে কেউ যেন কথা বলতে না পারে। তোমরা সেই দিকটা লক্ষ্য রেখো, পাল্টা বলা শুরু করবে। যেমন সরকারের অন্যায়, সরকারের নানা ধরনের গুম-খুন-বিচারবর্হিভূত হত্যা, লুটপাট, টাকা পাঁচার ইত্যাদির বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই তারা যেমন নানা ধরনের কালাকানুনের বৃত্তে তাকে আটকিয়ে রাখা হয়। এখন করোনার এই অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার বিষয়ে কথা বলতে গেলেও মন্ত্রীরা সেই অবস্থান নিচ্ছেন।
রিজভী বলেন, গতকাল (সোমবার) তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, এরকম বিরুদ্ধাচারণ করলে পরে তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে, আওয়ামী গতির সঙ্গে না চললে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
রিজভী বলেন, সরকার এতো বড় বড় কথা বলে। ছবিতে বড় বড় ফ্লাইওভার, উড়াল সেতু, দোতলা-তিনতলা রাস্তার ছবি দেখান যে, উন্নয়নে ভেসে যাচ্ছে। একেবারে প্রবল উন্নয়নে বাংলাদেশ সয়লাব-এসব উন্নয়নের গল্প শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। কিন্তু করোনার মতো মহামারি মোকাবিলা করার মতো যোগ্যতা যে সরকারের নাই, সেই সরকারের এই সব গালগল্প শুনে মানুষের মনকে ভেজানোর যে চেষ্টা করছে, এটাতে মানুষের মন ভেজে না সেই বোধটুকু এই সরকারের নাই।
রিজভী আরও বলেন, সরকার গণ টিকার নামে গণহয়রানি করছে। টিকা কেন্দ্রেই স্বাস্থ্যবিধি নেই। মানুষ বাঁচার জন্য টিকা নিতে গিয়ে আরও বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। যেখানে একটি কেন্দ্রে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ লোক টিকা নিতে পারে সেখানে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হচ্ছে। যেখানে নেই কোন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনাকালে সরকারের অদক্ষতার কারণে আশি পার্সেন্ট লোক গরীব হয়েছে। মানুষের খাদ্য ব্যয় কমে গেছে। মানুষের মনে হাহাকার। সরকার মানুষের অভাব উত্তরণের জন্য কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। রপ্তানি কমে গেছে এগারো শতাংশ। রেমিট্যান্স কমেছে আঠাশ শতাংশ। সবকিছু মিলিয়ে মানুষ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, বিএনপির স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় নেই। বিএনপি নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী অক্সিজেন ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিতরণ করে যাচ্ছে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা করোনা রোগীদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।