অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রেখে, পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বাংলাদেশ চলবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা।
বৃহস্পতিবার(২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস হলে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস।
এ আয়োজনে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সান্নিধ্য পাওয়ায় ‘গর্বিত ও অনুপ্রাণিত’ হওয়ার কথাও বলেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদেরকে দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের কল্যাণে যা কিছু প্রয়োজন তা করতে তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ী। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
মতভেদ ভুলে ‘এক হওয়ার’ আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাকবিতণ্ডা হবে, কিন্তু আমরা কেউ কারও শত্রু হব না। কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করব না। কাউকে ধর্মের কারণে শত্রু মনে করব না। আমরা সবাই সমান। কেউ কারো উপরে না এবং কেউ কারো নিচে না– এই ধারণা আমরা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বাংলাদেশ যেন বিশ্বে মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়, সেই প্রত্যাশা রেখে ইউনূস বলেন, আমরা এখন থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেন এই দেশে জনগণই সত্যিকার অর্থে সকল ক্ষমতার উৎস হয়।
জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনীতি সুসংহত করণে ‘সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমাদের তরুণ সমাজ সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও যেন মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে, আমাদের সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণের সূচনা করে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রতিবছর দিনটি ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ।