জয়া আহসান। অভিনেত্রী ও প্রযোজক। অসাধারণ অভিনয়শৈলী দিয়ে তিনি সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছেন। বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলায় জনপ্রিয় অভিনেত্রীর তালিকায় রয়েছেন তিনি। চারবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী এই অভিনেত্রীর জন্মদিন ছিল ১ জুলাই। জন্মদিন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি-
জন্মদিনের শুভেচ্ছা। এবারের জন্মদিন কীভাবে উদযাপন করলেন?
ধন্যবাদ। আপনাদেরও শুভেচ্ছা। সত্যি বলতে কী, কখনও সেভাবে ঘটা করে আমার জন্মদিন উদযাপন করা হয় না। বরাবরের মতো এবারও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছি। সাধারণত প্রতি জন্মদিনে মা আমার পছন্দের খাবার রান্না করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ ছাড়া জন্মদিনের আগের রাত থেকে শুরু করে পরদিন সারাদিন ভক্ত ও ভালোবাসার মানুষেরা শুভেচ্ছা জানিয়েছে। সবাই আমাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব সুন্দর করে নানা কথা লিখেছেন। অনেকের লেখায় আন্তরিকতা আর মমতা ছিল। সত্যিকারের ভালোবাসা এমন দিনেই টের পাওয়া যায়।
ভক্তদের এই ভালোবাসায় কেমন লাগে?
দারুণ লাগে। ভক্তদের কারণেই তো আমি আজকে জয়া হয়েছি। তারা না থাকলে আমিও নেই। ভক্তদের ভালোবাসায় আমি প্রতিনিয়ত আপ্লুত হই। তাই দর্শকের কথা মাথায় রেখে ভালো গল্পের ভালো সিনেমায় অভিনয় করি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। মহান আল্লাহ যেন আমায় সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন। যাতে করে ভক্ত-দর্শকদের ভালো ভালো গল্পের সিনেমা উপহার দিতে পারি।
জন্মদিনে পাওয়া সেরা উপহার কী?
সেটা অনেক বছর আগের কথা। তখন আমার বয়স পাঁচ বছর। সেই সময় আমরা কলাবাগানে থাকতাম। সেখানে আমার নানাবাড়ির নিচতলার এক ভাড়াটিয়া থাকতেন। সেই পরিবারে আমার বয়সী এক মেয়ে ছিল। যার নাম শান্তা। তার সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্ব হয়েছিল। সে যা করত আমিও তাই করতাম। এখনও মনে আছে, সে যদি মাথা ন্যাড়া করত, আমিও ন্যাড়া করতাম। সেই সময় আমার জন্মদিনে সে আমাকে একটি মাটির চুলা উপহার দিয়েছিল। খুব সুন্দর ছিল সেই মাটির চুলাটি। কী যে খুশি হয়েছিলাম সেই সময়। যা এখনও আমার মনে পড়ে। যদিও এখন সেই শান্তা কোথায় থাকে তা আমার জানা নেই। তারপরও সেই ঘটনা আজও আমার কাছে সেরা।
আপনার কাছে জীবনের সংজ্ঞা কী?
আমি মনে করি, মন খুলে বাঁচতে পারার নাম জীবন। জীবন উদযাপনের। জীবন উপভোগের।
আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব…
দেখুন, আমি চেষ্টা করি সময়ের সঙ্গে চলতে। তাই তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেমন আমার ছবি পোস্ট করি, ঠিক তেমনি সামাজিক নানা বিষয় নিয়েও নিজের মতামত প্রকাশ করি।
শুনলাম নতুন বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন?
ঠিকই শুনেছেন। আদনান আল রাজিবের পরিচালনায় একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় পণ্যটি নিয়ে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তবে দীর্ঘদিন পর ভালো একটি কাজ হয়েছে এটি বলতে পারি। নির্মাতা আদনানের সঙ্গে এবার প্রথম কাজ করলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। আশা করছি বিজ্ঞাপনটি সবার পছন্দ হবে।
এবার সিনেমার কথা বলুন?
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি সিনেমার সঙ্গে কাজের বিষয়ে চুক্তি করেছি। এখন সব নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। করোনার প্রকোপ কমলে কাজগুলো একে একে শুরু হবে। এ ছাড়া আমার প্রযোজিত ‘রইদ’ নামের একটি ছবি এ বছর সরকারি অনুদানের জন্য চূড়ান্ত হয়েছে। মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় নির্মিত এই ছবির কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে।
আপাতত সিনেমার ব্যস্ততা নেই, তাহলে এই সময়ে কী করছেন?
বাসায় নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি বাসার ছাদবাগান পরিচর্চা করছি। বাসার ছাদ ও ব্যালকনির চারপাশে প্রায় শতাধিক ফল ও সবজির গাছ রয়েছে। যার কারণে দিনের বেশিরভাগ সময় এই বাগানে আমার সময় কেটে যায়। মৌসুমি ফলের চাষ করেছি। সিনেমা দেখার পাশাপাশি প্রচুর বই পড়ছি। গান শুনছি। পরিবারের সবাইকে সময় দিচ্ছি। এভাবেই সময় কেটে যাচ্ছে। সিনেমার দেখার পাশাপাশি প্রচুর বই পড়ছি।