সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজই শুরু হয়নি, তার আগেই এ সংক্রান্ত প্রায় সাড়ে তিনশ দাবি-আপত্তি জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন ধরে এর মাস ছয়েক আগেই সীমানাসংক্রান্ত দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করতে চান।
কিন্তু কীভাবে এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না এ এম এম নাসির উদ্দিন কমিশন।
এর কারণ হিসেবে কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সীমানার খসড়া প্রকাশ করা যায়নি। শেষ হয়নি ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন’ সংশোধনের কাজও।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সীমানাসংক্রান্ত বিষয়ে এখনও আপডেট আমরা পাইনি। কেবিনেট থেকে যেসব কোয়েরি করেছে, সেগুলোর জবাব পাঠিয়েছি ইতোমধ্যে। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি সিদ্ধান্তের।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি সরকারের কাছে সংশোধন প্রস্তাব পাঠায় ইসি।
জমা পড়েছে সাড়ে তিনশ আবেদন: গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, বরগুনা, বরিশাল, পিরোজপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, সিলেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার অন্তত ৬০টি আসন নিয়ে দাবি-আপত্তি রয়েছে।
এসব আসন থেকে সাড়ে তিন শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১০৩টি আবেদন জমা পড়েছে পিরোজপুর-২ আসন নিয়ে।
আগের সংসদ নির্বাচনের আসন অপরিবর্তি রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য খসড়া ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খসড়া প্রকাশ করে তৎকালীন ইসি। এ নিয়ে দাবি কিংবা আপত্তি জমা দিতে ১৯ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
নির্ধারিত সময়ে ৩৮টি আসনের বিপরীতে শতাধিক আবেদন পড়ে। সেগুলোর ওপর ৩ থেকে ১৪ মে শুনানি হয়।
এরপর সব বিচার-বিশ্লেষণ শেষে কমিশন সবকিছু চূড়ান্ত করে জুনের মধ্যে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের রোডম্যাপ রাখে।
৩৮টি আসনে দাবি-আপত্তির আবেদন এলেও ১০-১২টি আসনের বিষয়ে যুক্তিতর্ক ও বিশ্লেষণই বেশি আমলে নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
বদিউল আলম মজুমদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ভবিষ্যতে স্বাধীন সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে।
একই সঙ্গে ২০০৮-২০২৩ সালের সীমানা নির্ধারণে বিতর্কের বিষয়টিও তুলে ধরেছে।
সংস্কার কমিশন বলেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিশেষ কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপকভিত্তিক সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ করা হয় ২০০৮ সালে। এসময় জাতিসংঘের সহায়তায় একজন আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণ বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ দিয়ে একটি গবেষণা করা হয়, যদিও ওই গবেষণার সব পরামর্শ গ্রহণ করা হয়নি।