শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে গরম কাপড়ের চাহিদাও। অভিজাত বিপণি বিতান থেকে ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার চাপ। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে সাধারণ মানুষ। অভিজাত মার্কেটগুলোতে ফ্যাশনের ওপর অধিক ফোকাস থাকলেও ভ্যানের ক্রেতাদের মূল লক্ষ্য স্বল্পমূল্যে শীত নিবারণ। শনিবার ( ৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেটের আশেপাশের এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের শুরু থেকে ক্রেতা মোটামুটি ছিল। তবে গত কয়েক দিনের তীব্র শীতে ক্রেতা বেড়েছে। ডিসেম্বরের শেষের দিকে বেশির ভাগ ক্রেতা ছিল হালকা শীতের জামার। তবে এখন ক্রেতারা ভারী কাপড় কিনছেন। সে অনুযায়ী তারা তাদের পসরা সাজিয়েছেন। হালকা শীতের কাপড়কে সরিয়ে ভারী কাপড় ডিসপ্লে করছেন।
বেইলি রোডের বেশির ভাগ ক্রেতাই উচ্চ মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত শ্রেণির। আর এখানে রয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শীতের পোশাক। যেখানে শীত নিবারণের থেকে ফ্যাশন সেন্সে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। অধিকাংশ ব্র্যান্ডই শীত উপলক্ষে তাদের নতুন কালেকশন এনেছেন। বিভিন্ন ডিজাইনারের কাপড় শোভা পাচ্ছে এসব মার্কেটে।
এদিকে ইনফিনিটি, ইয়েলোর মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলো শীতের কাপড়ের বিশেষ মার্কেটিং করতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ ব্র্যান্ড ‘নিউ এরাইভিং’ ব্যানার ও ম্যানেকুইনের মাধ্যমে শীতের কাপড় ডিসপ্লে করছে৷
ইনফিনিটি মেগামলের নিচতলায় শিশু ও নারী অংশে নানা ডিজাইনের শীতের কাপড়ের পসরা সাজানো হয়েছে। আর দ্বিতীয় তলায় পুরুষের নানা ধরনের ভারী ও হালকা শীতের কাপড়ের সমাহার দেখা গেছে। তবে স্যুটে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, ১ জানুয়ারি থেকে শীত বাড়ায় তাদের বিক্রি বেড়েছে। এতে খুশি দোকানিরা।
অভিজাত বিপণি বিতানের মতোই জমে উঠেছে ফুটপাতের দোকানগুলো। গুলিস্নেো ক্রেতার ভিড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুটপাতের দোকানিরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।
গুলিস্তানের ফুটপাত ও মার্কেটে ক্রেতার ভিড়ে হাঁটাচলাই দায় হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এসব ভাসমান দোকানে ক্রেতার ভিড় বেশি থাকে। যাদের সিংহভাগই নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। কাপড়ের স্তুপ থেকে পছন্দ অনুযায়ী সাইজ খুঁজে নিচ্ছেন ক্রেতারা। দাম নির্দিষ্ট থাকায় দামাদামি ছাড়ায় পছন্দসই কাপড় বেছে নিচ্ছেন তারা। নিম্ন ও নিম্নবিত্তের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্রেতারাও ভিড় করছেন এসব দোকানে।
গুলিস্তানের কাপড় বিক্রেতা আজিজ মিয়া বলেন, আমরা সিজন অনুযায়ী কাপড় বিক্রি করি। সারা বছরই আমাদের ভালো বেচাকেনা হয়। শীতের শুরুতে হালকা কাপড় বিক্রি করেছি৷ এখন ভারী কাপড় বিক্রি করছি। বেশির ভাগই এক্সপার্ট ও লাটের মাল। ফলে ক্রেতারা খুশি, আমরাও কম দামে বেশি বিক্রি করতে পেরে খুশি।
ইমন হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, অফিস থেকে আসা যাওয়ার পথে চোখে ভালো কিছু পড়লে কিনে নিই৷ আজ সরকারি ছুটির দিন, তাই গরম কাপড় কিনতে এলাম। এখানে কম দামে ভালো জিনিস পাওয়া যায়। নির্ভর করে কাপড় বোঝার সক্ষমতার ওপর৷ ভালো কাপড় চিনতে পারলে এখানে শপিং মলের মতো কোয়ালিটির কাপড় কেনা সম্ভব।