মাগুরার একটি সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়ে কৈশরেই আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছেন সাদাত রহমান (১৭)। ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক শিশু পুরষ্কার জয়ী এই কিশোর শোনালেন তার পেছনের গল্প।
জানালেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করলেন শিশু ও তরুণদেরকে।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মাগুরা শহরের শহীদ সৈয়দ আতর আলী গণ গ্রন্থাগার মিলনায়তনে ‘বিশ্ব জয়ের গল্প শুনি’ শীর্ষক আলোচনাসভার আয়োজন করে মাগুরা প্রথম আলো বন্ধুসভা।
মাগুরা সদর উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের মসজিদ বাড়ির ছেলে সাদাত রহমান। বাবা মো. সাখাওয়াৎ হোসেনের চাকরি সূত্রে এখন পড়ালেখা করছেন নড়াইলে। উচ্চ মাধ্যমিকের এই শিক্ষার্থী নড়াইলে থাকতে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে সাইবার বুলিং বা অনলাইনে হুমকি ও হয়রানিমূলক আচরণ সম্পর্কে তরুণদের শেখানো হয়।
সাইবার বুলিং এর শিকার হয়ে ১৫ বছরের এক কিশোরীর আত্মহত্যা ঘটনা জানতে পেরে এই অ্যাপ বানাতে অনুপ্রাণিত হন তিনি। সাইবার টিনস নামে ওই এ্যাপের মাধ্যমে তরুণ বয়সিরা তাদের সঙ্গে হওয়া অনলাইন হয়রানির অভিযোগও জানাতে পারেন। এই উদ্যোগের কারণেই গতবছর সাদাতকে ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড পিস প্রাইজ বা আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে নেদারল্যান্ডের হেগ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন। এই পুরস্কারের পূর্ববর্তী বিজয়ীদের মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন।
আলোচনা সভায় সাদাত জানান, প্রথমে নড়াইল দিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন সারা দেশে কিভাবে এটি ছড়িয়ে দেওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছেন তিনি ও তার দল। নিজের সফলতার গল্প শোনানোর পাশাপাশি উপস্থিত শিশু কিশোরদেরকে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন সাদাত। আলোচনা সভায় উপস্থিত শিশু কিশোরদের নানা রকম প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
প্রথম আলো বন্ধুসভার এ আয়োজনে সংগঠনের সদস্যরা ছাড়াও ন্যাশনাল চিলড্রেনস টাস্ক ফোর্স নামে একটি সংগঠনের মাগুরা জেলার সদস্যরা অংশ নেন।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন— প্রথম আলো মাগুরা বন্ধুসভার উপদেষ্টা ঝিনাইদহ কে সি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খান শফিউল্লাহ, মাগুরা সরকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আবু সাইদ মোল্লা, একই কলেজের সহযোগী অধ্যাপক রুহুল আমীন, ব্যবসায়ী বাবুল কুরি, মাগুরা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম মঞ্জু ও প্রথম আলোর মাগুরা প্রতিনিধি কাজী আশিক রহমান।