করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ও ছড়াকার আলম তালুকদার। বুধবার বেলা তিনটার দিকে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। গত শনিবার শরীরের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর।
১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন আলম তালুকদার। তার শৈশব কেটেছে গ্রামে। তিনি এক সময় বেগম সুফিয়া কামাল গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন। পরে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
তার প্রথম বই ‘ঘুম তাড়ানো ছড়া’ প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। তাঁর ছড়ার উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে খোঁচান ক্যান, চাঁদের কাছে জোনাকি, ডিম ডিম ভুতের ডিম, ঐ রাজাকার, যুদ্ধে যদি যেতাম হেরে, বাচ্চা ছড়া কাচ্চা ছড়া, ছড়ায় ছড়ায় আলোর নাচন, জাদুঘরের ছড়া, ছড়ায় ছড়ায় টক্কর, ছড়া সমগ্র প্রভৃতি। তাঁর লেখা শিশুতোষ গল্পের বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মহাদেশ বাংলাদেশ উপদেশ, শিশুদের শিশুটামি, অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, নাই দেশের রূপকথা, ভুতের সঙ্গে ভুত আমি, কিশোর সমগ্র, গল্প সমগ্র প্রভৃতি। উল্লেখযোগ্য সম্পাদিত বই হচ্ছে- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান স্মারক গ্রন্থ, জাদুঘর বিচিত্রা, টাঙ্গাইল জেলার স্থান নাম বিচিত্রা, ছোট ছোট উপাখ্যান হাসিতে আটখান।
লেখালেখির কারণে অনেক স্বীকৃতিও পেয়েছেন গুণী এই শিশুসাহিত্যিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- পালক অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৬, চোখ সাহিত্য পুরস্কার ২০০০, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার ১৪০৫, জসীম উদদীন পুরস্কার ২০০১, কবি কাদির নওয়াজ পুরস্কার ২০০৪, স্বাধীনতা সংসদ পুরস্কার ২০০৬, অলোক আভাষ সাহিত্য পত্রিকা পুরস্কার ২০০৬, শিল্পাচার্য জয়নুল পুরস্কার ২০০৮, সাহস সম্মাননা ২০১০, ফুটতে দাও ফুল সম্মাননা পদক ২০১১, সাহিত্যে জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখার জন্য টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদ পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।