মালয়েশিয়ার নবম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ৪৫ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। এর আগে মুহিউদ্দীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
শনিবার (২১ আগস্ট) রাজ প্রাসাদে শপথবাক্য পাঠের মাধ্যমে ইসমাইল সাবরি দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। শপথ শেষে ইসমাইল সাবরি তার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন। যা পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি সত্যায়িত করেন। ৬১ বছরের ইসমাইল সাবরি মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাকে স্ত্রী মুহাইনি জায়নিল আবিদিনকে সঙ্গে নিয়ে রাজ প্রাসাদে শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ সময় রাজার সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দেশটির রাণীও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দীন ইয়াসিন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের দিনে বিরোধীদের বিক্ষোভের আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে রাজধানী কুয়ালালামপুরে। বিশেষ করে মারদেকা স্কয়ার, মসজিদ জামেক ও সগো এলাকায় যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বসানো হয়েছে রোডব্লকও।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দীন ইয়াসিন পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেন দেশটির রাজা। সেখানে সব সংসদ সদস্যদের লিখিত মতামত নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে শুক্রবার (২০ আগস্ট) ইসমাইল সাবরিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দেন রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ।
এদিকে ইসমাইল সাবরি এমন সময়ে শপথ নিলেন, যখন মালয়েশিয়ার সংক্রমণ এবং জনসংখ্যার তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সর্বোচ্চ।
একাধিক বর্ধিত লকডাউন এবং টিকা বাড়ানোর পরেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় জনরোষ বেড়েছে। গত মাস থেকে, মালয়েশিয়ানরা সাহায্যার্থে তাদের বাড়িতে সাদা পতাকা উত্তোলন করেছে।
যদিও মালয়েশিয়া গত বছর মহামারির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা থেকে রক্ষা পেয়েছিল, তবে ২০২০ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিক থেকে একটি আঞ্চলিক নির্বাচনের ফলে সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে, ডেল্টা বৈচিত্রটি সাম্প্রতিক মাসগুলিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে।
মহামারিটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকেও ম্লান করে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছরে দুইবার ২০২১ এর পূর্বাভাস হ্রাস করেছে। ঘুরে ফিরে ইউনাইটেড মালয়েস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনই (ইউএমএনও) ক্ষমতার মসনদে ফিরে এলো।
যা স্বাধীনতার ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করেছে দলটি। কিন্তু রাষ্ট্রীয় তহবিল ১ এমডিবির একটি কেলেঙ্কারির কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল দলটি।
নাজিবকে ১ এমডিবির উপর দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল কিন্তু তিনি অন্যায়কে অস্বীকার করেছেন এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করেছেন।