‘লকডাউন ঘোষণা না করে বড় ভুল করেছে’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার লকডাউন ঘোষণা না করে বড় ভুল করেছে। বুধবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

উত্তরার নিজের বাসায় এই ভার্চুয়াল ভিডিও কনফারেন্সে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার তো লকডাউনই ঘোষণা করেনি। তারা বলেছে, সাধারণ ছুটি। যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা হবে তখন তো ছুটির আমেজ আসবেই। তখন কেউ কক্সবাজার যায়, কেউ সিলেট যায়, কেউ বাড়ি যায়, কেউ মামার বাড়ি যায়, কেউ নানার বাড়ি যায়। এটাই তো আমাদের দেশের একটা কৃষ্টি বলা যেতে পারে। ওই জায়গায়টাতে সরকার সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছে। তারা লকডাউন ঘোষণা না করে সাধারণ ছুটি দিয়ে এই সমস্যাটা সৃষ্টি করেছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় ছিলো না। কোনো সমন্বয় না রেখে তারা গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো খুলে দিলো, আবার বন্ধ করলো, আবার খুলে দিলো। গণপরিবহনও দু’দিন চললো। এরপর আবার অমানবিকভাবে শিশু-বৃদ্ধদের নিয়ে নারী-পুরুষেরা হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে গিয়েছেন, ট্রাকে করে অনেকে বাড়িতে ফিরেছেন- কোনো সমন্বয় ছিলো না বলে এটা হয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা—স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা ভেঙেই গেছে। এখন কোনো হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা পাওয়াটা খুব দুরূহ ব্যাপার। সরকারি হাসপাতালের যে অবস্থা সেখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তো যাচ্ছেনই না। তারা এখন সিএমএইচ বা অন্য হাসপাতালগুলোতে চেষ্টা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের অভিজ্ঞতার অভাব আর তাদের উদাসীনতার কারণে এমনটা হয়েছে। তারা বুঝাতে চেয়েছেন যে, আমাদের এখানে সমস্যা নেই। আমরা সাধারণ ছুটি দিয়েছি। অথচ লকডাউন কথাটা প্রত্যেকটি দেশ ব্যবহার করেছে, প্রত্যেকটি সরকার ব্যবহার করেছে। এভাবে করে তো সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় না।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে প্রাথমিকভাবে লকডাউন রেখে যদি সঠিকভাবে সেটা বজায় রাখা যেতো তাহলে সংক্রমণটা অনেক কম হতো। এখন সারাদেশের গ্রামে-গঞ্জে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। এমন একটা গ্রাম নেই যেখানে কেউ আক্রান্ত হয়নি। পরীক্ষা তো নেই, পরীক্ষা হলেই ধরা পড়তো। আমরা যদি প্রথমেই লকডাউন দিতাম তাহলে এতো সংক্রমণ হতো না। এই ঘনবসতির দেশে শক্তভাবে এটাকে বাস্তবায়িত না করলে মোকাবিলা করা খুব কঠিন।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান প্রথমদিকেই করোনা কিট উদ্ভাবন করল, এখন পর্যন্ত সেটার অনুমোদন পায়নি। সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা কিটের পরীক্ষা শেষ করে তা ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমি তার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Comments (0)
Add Comment