র‌্যাবের বিশেষ অভিযান, ৫০ লাখ টাকার ওয়াকিটকি জব্দ

রাজধানীতে র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে ৫০ লাখ টাকার ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে। র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহ্ফুজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে পল্টন থেকে ১৬টি ওয়াকিটকি সেটসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাতে অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে জব্দ করা ওয়াকিটকির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

র‌্যাব জানিয়েছে, রাজধানীর সায়েদাবাদ, মনিপুরীপাড়া, রাজারবাগ ও শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে ৩১৭টি ওয়াকিটকি এবং সংশ্লিষ্ট বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযানে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলেন- মেহেদী হাসান (২৭), মো. সাদিক হাসান (২৬), মো. ফয়সাল (২৩), তালিবুর রহমান (২৪) ও মো. ফারুক হাসান (৫৯)।

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক মাহ্ফুজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ এর ধারা ৫৫ (৭) মোতাবেক ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য কোনো প্রকার লাইসেন্স বা তরঙ্গ গ্রহণ করেনি গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা। এছাড়া একই আইনের ৫৭ (৩) ধারা মোতাবেক ওয়াকিটকি আমদানি করার আগে বিটিআরসি থেকে অনাপত্তি গ্রহণের বিধান থাকলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। তারা অবৈধভাবে ওয়াকিটকি ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি আমদানি করে বিক্রি করছিল।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কতিপয় অপরাধী চক্রের সদস্য বিদেশ থেকে দীর্ঘ এক বছর যাবত লাইসেন্স ছাড়া ওয়াকিটকি ও সরঞ্জমাদি অবৈধ পথে কিনে আনছে।

মাহ্ফুজুর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আমদানিকারক চক্রটি একটি অপরাধী চক্রের সদস্য। চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক ওই চক্রটিকে র‌্যাব শনাক্ত করে। তারা এখন পর্যন্ত ১১৫০টি ওয়াকিটকি অবৈধ পন্থায় বিক্রি করেছে। এতে ওয়াকিটকি সেট ও প্রয়োজনীয় তরঙ্গ ব্যবহারের লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে সরকার যে রাজস্ব পেত, তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মূলত রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যেই চক্রটি অবৈধ উপায়ে ও মিথ্যা ঘোষণায় ওয়াকিটকি সেট ও সরঞ্জমাদি আমদানি করেছে।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, বিটিআরসি থেকে জারিকৃত নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কালো রঙের ওয়াকিটকি ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এক্ষেত্রে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ধরনের অবৈধ ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধী চক্র ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, প্রতারণাসহ বহুবিধ অপরাধ করে থাকে। বিভিন্ন সময় ভুয়া র‌্যাব কিংবা পুলিশ সদস্য আটকের পর এই ধরনের ওয়াকিটকি সেট জব্দ করার ঘটনা ঘটছে।

র‌্যাব জানিয়েছে, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে অবৈধভাবে আমদানি করা ওয়াকিটকি ওয়্যারলেসের ব্যবহার অশনিসংকেত। এর অবৈধ ব্যবহারকারী ও আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে বিটিআরসির সহযোগিতায় র‌্যাব আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে এবং অভিযান অব্যাহত রাখবে।

প্রসঙ্গত, অনুমোদনহীন তরঙ্গ ব্যবহার করা এবং লাইসেন্স ছাড়া ওয়াকিটকি ব্যবহারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কালো ওয়াকিটকি শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু একটি অপরাধী চক্র বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে অন্য পণ্যের আড়ালে কালো ওয়াকিটকি আমদানি করছে।

Comments (0)
Add Comment