মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের মহাসচিব মুহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল-ইসা বলেছেন, নিউ ইয়র্কে বিখ্যাত লেখক সালমান রুশদির ওপর হামলা ‘একটি অপরাধ, যা ইসলাম সমর্থন করে না’। সৌদি সংবাদ সংস্থা আরব নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইসলাম সহিংসতার বিরুদ্ধে। সহিংসতার কোনো পদ্ধতিকে কখনোই ইসলাম স্বীকৃতি দিতে পারে না।’
তিনি আরো বলেন, ধর্ম হলো ‘এই জীবনে মানুষের অস্তিত্বের অনুভূতি, বিশেষ নীতির ওপর ভিত্তি করে মূল্যবোধের সমষ্টি, যার ভিত্তিতে শুধু একটি দর্শনই নয় বরং একটি ধর্মীয় উৎসও রয়েছে, যা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে। এর জন্য আমরা ধর্ম এবং ধর্মীয় প্রবৃত্তি উভয়েরই মূল্যবোধের কথা বলি। এর মানে হলো মানুষের বিশ্বাসের অনুভূতি।’ তিনি বলেন, প্রেম এবং আবেগ হলো ধর্মের কেন্দ্রীয়করণ।
‘মুমিনকে অবশ্যই অন্য সকলকে ভালোবাসতে হবে, যদি সে তাদের সাথে একমত না হয় তবুও। বিশ্বাসী জানে যে এই জীবনে ভালোবাসা এবং করুণা প্রয়োজন। প্রেমই জীবন, সহাবস্থান, শান্তি, সম্প্রীতি।’
তিনি যোগ করেন, ‘যদিও প্রত্যেকে একে অপরের থেকে আলাদা হতে পারে, অন্য ব্যক্তির সম্পর্কে ভয় বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা সবাই এই পৃথিবীতে জীবন ভাগ করি এবং আমাদের অবশ্যই একে অপরের সাথে কথা বলতে হবে এবং বুঝতে হবে। মানুষের মধ্যে পার্থক্য মানবতার সৃষ্টিতে ফিরে যায়। যদি ঈশ্বর চাইতেন, তিনি শুধু একটি একক জাতিগোষ্ঠী বা একক ধর্ম সৃষ্টি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, এবং আমাদের তার জ্ঞানে বিশ্বাস করতে হবে।’
তিনি প্রত্যেকের জন্য ‘মর্যাদার সাথে বসবাস করার জন্য―সমস্ত সংখ্যালঘুদের এবং তারা যে দেশে বাস করেন সেখানে ভালোভাবে একীভূত হওয়ার জন্য কামনা করেছিলেন। আমরা আরো আশা করি যে বিশ্বের সমস্ত সরকার সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং তাদের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকে সম্মান করবে। আমরা বিশ্বের কোনো সংখ্যালঘুকে ক্ষুব্ধ করা মেনে নেব না, তারা মুসলিম হোক বা না হোক।’
এর আগে, ৭৫ বছর বয়সী রুশদি গত ১২ আগস্ট পশ্চিম নিউ ইয়র্কের চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনে শৈল্পিক স্বাধীনতার ওপর একটি বক্তৃতা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন তিনি হাদি মাতার নামের এক ব্যক্তির দ্বারা আক্রমণ ও ছুরিকাঘাতের শিকার হন। হাদি ২৪ বছর বয়সী। লেবানন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তিনি।
রুশদি ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর থেকে মৃত্যুর হুমকি নিয়ে বেঁচে আছেন। তার এ বইটি ইরানের তৎকালীন নেতা আলী খামেনিকে তাকে হত্যা করার জন্য মুসলমানদের প্ররোচিত করেছিল।
সূত্র : আল অ্যারাবিয়া।