খাদ্যশস্য রপ্তানিতে রাশিয়া-ইউক্রেন ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে কমতে শুরু করেছে গমের দাম। বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকসের হিসাবে শিকাগোর অগ্রিম বাজারে গত শুক্রবার গমের দাম ৫.৮৬ শতাংশ কমে প্রতি বুশেল হয় ৭.৬ ডলার, যা পাঁচ মাসে সর্বনিম্ন। রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার আগে এই দর ছিল।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর থেকেই সরবরাহ শঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে থাকে গমের দাম। বিশ্বের মোট গম সরবরাহের ২৯ শতাংশই আসে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। একদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় আটকে যায় রাশিয়ার রপ্তানি, অন্যদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বন্দর দখল ও অবরোধে বন্ধ হয়ে যায় ইউক্রেনের রপ্তানিও। এর ফলে গম আমদানি নিয়ে শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশসহ বিপুলসংখ্যক দেশ।
কিন্তু গত শুক্রবার (২২ জুলাই) বিশ্ববাজারে গমসহ খাদ্যশস্য রপ্তানি বিষয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করার ফলে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে বিশ্ব। তুরস্কে অনুষ্ঠিত এ চুক্তির ফলে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগরে তাদের অবরোধ শিথিল করবে, যাতে ইউক্রেন থেকে জাহাজে করে খাদ্য রপ্তানি হতে পারে।
এতে ইউক্রেনে রপ্তানির উদ্দেশ্যে মজুদ থাকা ২০ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য বিশ্ববাজারে আসার দ্বার খুলল। শুধু গমই নয়, ইউক্রেনের উৎপাদিত সূর্যমুখী তেল, বার্লি ও ভুট্টা রপ্তানির দ্বারও খুলে গেল। ইউক্রেনের কৃষকরা গুদাম খালি হলে নতুন ফসল ওঠানোরও সুযোগ পাবেন।
তুরস্ক বলছে, এ চুক্তির ফলে শুধু ইউক্রেন নয়, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে রাশিয়ার খাদ্য রপ্তানিও সহজ হবে। এই চুক্তির ফলে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে বাংলাদেশের গম আমদানির পথ খোলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি সংস্থা ইউএসডিএ এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, এ বছর বিশ্বে গমের সরবরাহ ও রপ্তানি বাড়বে। এর বিপরীতে ২০২২-২৩ বিপণন বছরে গমের ভোগ কমবে। এ বছর বিশ্বে গম রপ্তানি হবে রেকর্ড ২০৫ মিলিয়ন টন। শীর্ষস্থানীয় ১০ গম রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে রাশিয়া, দ্বিতীয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তৃতীয় অস্ট্রেলিয়া, চতুর্থ কানাডা, পঞ্চম যুক্তরাষ্ট্র, ষষ্ঠ আর্জেন্টিনা, সপ্তম ইউক্রেন, অষ্টম কাজাখস্তান, নবম ভারত এবং দশম স্থানে রয়েছে তুরস্ক।
সূত্র : ট্রেডিং ইকোনমিকস, এএফপি