রাত পোহালেই শুরু হতে যাচ্ছে মুজিব বর্ষ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচির উদ্বোধনে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অনুষ্ঠানের পরিসর সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। মুজিব বর্ষের সূচনার অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী আতশবাজি, আলোকসজ্জা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আতশবাজির অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার হলেও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান ধারণ করে টেলিভিশনে প্রচার করা হবে। ১৬ তারিখ দিবাগত রাত ১২টা অর্থাৎ ১৭ মার্চ প্রথম প্রহর থেকে মুজিব বর্ষের সূচনা হলেও রাত ৮টায় আতশবাজির মাধ্যমে তা উদযাপন করা হবে। কারণ ১৯২০ সালের এই দিনে রাত ৮টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাঙালি জাতির এ মহানায়ক। আতশবাজির মূল অনুষ্ঠান হবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও হাতিরঝিলে। এরপর অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠান রাজধানীর একটি অডিটোরিয়ামে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে যন্ত্রসংগীত, নৃত্য, দলীয় ও একক সংগীত। শিশুশিল্পীসহ দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় প্রায় ২ ঘণ্টার এ অনুষ্ঠান আতশবাজি শেষ হওয়ার পর দেশের সরকারি-বেসরকারি সব টেলিভিশন ও বেতারে একযোগে সম্প্রচার করা হবে। এটি প্রচার করা হবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
১৭ মার্চ একই সঙ্গে জাতীয় শিশু দিবস হওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
মুজিব বর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবে বিভিন্ন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জনসমাগম এড়িয়ে সফলভাবে দিনটি পালনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দলের ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে। কেন্দ্রীয় উদ্যোগে রাজধানীর ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আতশবাজির আয়োজন করা হয়েছে। একই সময়ে একযোগে দেশের সব ইউনিট কার্যালয়ে আতশবাজি অনুষ্ঠানের জন্য সব ইউনিটকে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুংগীপাড়াতেও থাকছেও বিভিন্ন আয়োজন।
দলীয় অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় দেশের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন।
সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মিলাদ মাহফিল ও স্বল্প পরিসরে শিশু সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি গ্রন্থমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। বাদ জোহর দেশের সব মসজিদ ও বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।