রাজধানী ঢাকায় গত কয়েক দিন পাইপলাইনে গ্যাসের সংকট তীব্র হয়েছে। কিছু এলাকায় দিনের বেশির ভাগ সময়ই গ্যাস থাকছে না; কিছু এলাকায় থাকলেও সরবরাহ সামান্য।সাধারণত ছুটির দিনে গ্যাস একটু স্বাভাবিক থাকে; কিন্তু আজ শুক্রবারও (৩ জানুয়ারি) অনেক এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাসের অভাবে ঠিকমতো রান্না করা যাচ্ছে না।
বিতরণ সংস্থা ‘তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এলএনজি টার্মিনাল মেরামতের কারণে গ্যাস সরবরাহ কমে আসায় ‘কিছু এলাকায়’ সংকট তীব্র হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, তাদের তিতাসের লাইনে গ্যাস সরবরাহ বৃহস্পতিবার প্রায় সারা দিন বন্ধ ছিল। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বনশ্রী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বাসাবো ও আজিমপুরের বাসিন্দাদের।
ধানমন্ডি রহমত আলী খন্দকার বলেন, গত তিন চার মাস ধরে লাইনে গ্যাস আসছে না। ভোর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত লাইনের গ্যাসে রান্নাই করা যায় না।
ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের একই অভিজ্ঞতা; দিনের বেশির ভাগ সময় গ্যাসের সরবরাহ থাকে না। শীত শুরুর পর থেকেই পর্যাপ্ত গ্যাসের সরবরাহ নেই। সেখানকার বাসিন্দারা সিলিন্ডার গ্যাস ও ইলেকট্রিক চুলায় রান্নাবান্না করছেন।
মিরপুরের কালসী এলাকার বাসিন্দা নূরুন্নোসা জানান, আগে দিনের বেলায় গ্যাসের চাপ কম থাকত। এখন ভোর থেকেই গ্যাস থাকে না। ফলে দিনের রান্নাগুলো ভোরের আগেই শেষ করতে হয়। বাসাভাড়ার সঙ্গে গ্যাসের বিলও দিতে হয়। এর চেয়ে বরং যারা সিলিন্ডার গ্যাসের বাসায় ভাড়া থাকেন, তারাই ভালো আছেন।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, লাইনের গ্যাসের সংযোগ থাকার পরও অনেক বাসায় বাড়তি এলপিজির সিলিন্ডার রাখতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার পেট্রোবাংলার প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন সারাদেশে ২৫০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগের যে কোনো দিনের চেয়েও অন্তত ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট কম।
এদিন সাগরের এলএনজির ভাসমান টার্মিনাল থেকে এসেছে ৫৭৪ মিলিয়ন ঘনফুট। যদিও সেখান থেকে ১১৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে।
মহেশখালীর একটি টার্মিনাল মেরামতের জন্য সেটি ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন বন্ধ রাখা হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছে পেট্রোবাংলা।
ঢাকা অঞ্চলের গ্যাস সরবরাহে নিয়োজিত তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ নেওয়াজ পারভেজ গণমাধ্যমকে বলেন, তিতাস এলাকায় প্রায় ১৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। টার্মিনাল মেরামতের কারণে তা ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কমে এসেছে। সে কারণে কিছু এলাকায় সংকট তীব্র হয়েছে। ঢাকায় গ্যাসের সমস্যা তো বহুদিনের। কিছু এলাকায় চাহিদা মত গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। আবার কিছু এলাকায় লাইনে সমস্যা আছে। ফলে বেশি চাপে গ্যাস দেওয়া যায় না। আমরা একেকটি অঞ্চল ধরে লাইন মেরামতের চেষ্টা করছি