ন্নাঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী রাইস কুকার ও প্রেসার কুকার ব্যবহারে অসাবধানতা প্রায়শই দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ছোটখাটো এই যন্ত্রগুলো সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করলে বিস্ফোরণের মতো গুরুতর দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে, যা থেকে বড় ধরনের বিপদ এমনকি প্রাণহানিও হতে পারে। তাই এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। চলুন জেনে নেই এ সম্পর্কে।
প্রেসার কুকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা
প্রেসার কুকার ব্যবহারের সময় এর ভেতরের চাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই চাপ নিয়ন্ত্রিত না থাকলে বিস্ফোরণের ঝুঁকি থাকে।
নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি ও খাবার: প্রেসার কুকারে রান্নার সময় নির্দেশিকা মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি এবং খাবার দিন। অতিরিক্ত খাবার বা কম পানি বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সঠিকভাবে ঢাকনা লাগানো: ঢাকনাটি ভালোভাবে আটকানো হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করুন। অনেক সময় তাড়াহুড়োয় ঢাকনা ঠিকমতো না লাগলে ভেতরের বাষ্প বাইরে বেরিয়ে আসে বা চাপ তৈরি হয় না, আবার উল্টোভাবে চাপ অতিরিক্ত হয়ে বিস্ফোরণও ঘটতে পারে।
সেফটি ভালভ পরীক্ষা: প্রেসার কুকারের সেফটি ভালভ বা সেফটি ফিউজ নিয়মিত পরীক্ষা করুন। এটি কুকারের অতিরিক্ত চাপ বের করে দিতে সাহায্য করে। ভালভ নষ্ট থাকলে তা অবিলম্বে পরিবর্তন করুন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: ব্যবহারের পর প্রেসার কুকারের ভালভ এবং রাবার গ্যাসকেট (রিং) ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। অনেক সময় খাবারের কণা জমে ভালভ বন্ধ হয়ে যায়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ঠান্ডা করার নিয়ম: রান্না শেষে সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকনা খোলার চেষ্টা করবেন না। কুকারকে নিজে থেকে ঠান্ডা হতে দিন অথবা ঠান্ডা পানির নিচে ধরে দ্রুত ঠান্ডা করে নিন, যাতে ভেতরের চাপ কমে যায়।
পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত কুকার পরিহার: পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত প্রেসার কুকার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। ত্রুটিপূর্ণ কুকার যেকোনো সময় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
রাইস কুকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা:
রাইস কুকারে সাধারণত উচ্চ চাপ তৈরি হয় না, তবে বৈদ্যুতিক ত্রুটি বা অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সঠিক ভোল্টেজ ও সকেট: রাইস কুকার সবসময় সঠিক ভোল্টেজ সাপ্লাই এবং ভালো মানের সকেটে ব্যবহার করুন। নিম্নমানের তার বা সকেট ব্যবহার করলে শর্ট সার্কিট হতে পারে।
ভেতরের পাত্রের সঠিক স্থাপন: রান্নার আগে নিশ্চিত করুন যে রাইস কুকারের ভেতরের পাত্রটি সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়েছে। পাত্রটি ঠিকমতো না বসলে কুকার অতিরিক্ত গরম হতে পারে।
পানি ও চালের পরিমাণ: নির্দেশিকা অনুযায়ী চাল ও পানির সঠিক অনুপাত বজায় রাখুন। অতিরিক্ত পানি উপচে পড়ে বৈদ্যুতিক অংশে ঢুকে শর্ট সার্কিট ঘটাতে পারে।
পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখা: রাইস কুকারের বাইরের অংশ এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থান সবসময় শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখুন। ভেতরের পাত্র পরিষ্কার করার সময় সতর্ক থাকুন যেন বৈদ্যুতিক অংশে পানি না যায়।
স্বয়ংক্রিয় বন্ধের কার্যকারিতা: রাইস কুকারের স্বয়ংক্রিয় বন্ধ (Auto Shut-off) ফাংশনটি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা নিশ্চিত করুন। এই ফাংশনটি নষ্ট থাকলে অতিরিক্ত গরম হয়ে আগুন লাগার ঝুঁকি থাকে।
খোলা জায়গায় ব্যবহার: রাইস কুকার এমন স্থানে ব্যবহার করুন যেখানে বায়ু চলাচল ভালো হয়। দেয়াল বা অন্য আসবাবপত্রের খুব কাছাকাছি রাখলে তাপ নির্গমনে বাধা পেয়ে অতিরিক্ত গরম হতে পারে।
উপরে উল্লেখিত এই সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ টিপসগুলো মেনে চললে রাইস কুকার ও প্রেসার কুকার বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। আপনার রান্নাঘরকে নিরাপদ রাখতে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।