বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। রবিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
মিতা হকের ননদাই শিল্পী সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোহরাব উদ্দিন জানান, গত ৩১ মার্চ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন মিতা হক। একপর্যায়ে করোনা থেকে সেরে উঠে হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে আসেন। তিনি কিডনি রোগে ভুগছিলেন। একারণে তার ডায়লাইসিস করতে হতো। শনিবার (১০ এপ্রিল) ডায়লাইসিসের সময় তার প্রেসার ফল করে। এর পর বাসায় নেওয়ার পরও আবার তার প্রেসার ফল করলে আবারো হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। এসময় চিকিৎসকরা জানান, মিতা হক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাকে। একপর্যায়ে রবিবার সকালে চিরদিনের জন্য বিদায় নিলেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে মিতা হকদের আদি বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে।
শিল্পী মিতা হক ১৯৬৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথমে তাঁর চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বার্লিন আন্তর্জাতিক যুব ফেস্টিভালে অংশ নেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি তবলা বাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে সংগীত শেখা শুরু করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে নিয়মিত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সংগীত পরিবেশনা করেছেন।
২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন মিতা হক। এরপর কবি রবীন্দ্রনাথের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘রবি-চ্যানেল আই রবীন্দ্রমেলা’য় রবীন্দ্রসংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মিতা হককে সম্মাননা দেওয়া হয়। ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
মিতা হক অভিনেতা-পরিচালক খালেদ খানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। খালেদ খান ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এই দম্পতির ফারহিন খান জয়িতা নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
এদিকে, মিতা হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।