যৌথ বাহিনীর ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ গ্রেপ্তার ৯৫

দেশজুড়ে চলমান যৌথ বাহিনীর ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ গ্রেপ্তার ৯৫অপারেশন ডেভিল হান্টে এ পর্যন্ত ৯৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে গাজীপুরে ৬৫, নোয়াখালীতে ৭, খাগড়াছড়িতে ৪ ও রংপুর বিভাগে ১৯ জন রয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গাজীপুর জেলার পাঁচ থানায় ৪০ জন ও মহানগরের আট থানায় ২৫ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক বলেন, জেলার বিভিন্ন থানায় অভিযান চলছে। তবে এখনো তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। শনিবার থেকে শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্টে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা বিভিন্নভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন।

এদিকে গাজীপুর মহানগরের ৮ থানায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদুল হক। তিনি বলেছেন, অপারেশন ডেভিল হান্ট চলমান রয়েছে।

অপরদিকে, রংপুর মহানগরীতে ৫ এবং বিভাগে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। শনিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, শনিবার ১২টা থেকে শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্টে মহানগরীর তাজহাটে দুই এবং কোতোয়ালি, হারাগাছ ও মাহিগঞ্জ থানা এলাকা থেকে একজন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম জানান, রেঞ্জের আওতাধীন আট জেলার মধ্যে কুড়িগ্রামে ৬, দিনাজপুরে ৩, ঠাকুরগাঁও ২ এবং গাইবান্ধা, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে রংপুর এবং নীলফামারী জেলা থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

বিভাগের রেঞ্জ ডিআইজি জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ নাশকতা, পরিকল্পনা ও অর্থযোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। তাদের নামে মামলা রয়েছে।

অপরদিকে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে খাগড়াছড়ির গুইমারায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের চার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে গুইমারার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে গুইমারা থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন গুইমারার বড়পিলাক গ্রামের বাবুল মিজির ছেলে সোহাগ মিয়া, অহিদ মিয়ার ছেলে মো. সেলিম, মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম ও আব্বাস আলীর ছেলে মো. আজিজুল।

তাদের মধ্যে সোহাগ মিয়া গুইমারার হাফছড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ও অন্যরা নিষিদ্ধ সক্রিয় কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে গুইমারা থানায় মামলা রয়েছে।

এদিকে অপারেশন ডেভিল হান্টের প্রথম দিনে নোয়াখালী হাতিয়ায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদ (৬৪), হাতিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বেলাল উদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৬), ৩নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুস শহিদের ছেলে আবুল কালাম বিটু (৪৪), নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে আজিম উদ্দিন (৩১), তমরুদ্দি ইউনিয়নের মহিন উদ্দিনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ রাকছান (২৪), হাজী আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে আবদুল মাজেদ পলাশ (৪৩) ও আব্দুল জাহের (৩৯)।

হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণার পর হাতিয়া থানায় এটি প্রথম অভিযান ছিল। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসঙ্গে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও পুলিশের যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Comments (0)
Add Comment