বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আর বাড়াবার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর নিষেধাজ্ঞা দেবে না। অন্য কোথাও এর প্রভাব পড়বে না। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে আমরা যে সাড়া পেয়েছি তাতে আর নিষেধাজ্ঞার কোনো আশঙ্কা দেখি না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন থেকেই আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ও ট্রেজারি বিভাগের কাছে চিঠি দিয়ে কারণ জানতে চেয়েছি। তারা আমাদের চিঠির উত্তর দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো বন্ধু দেশের কাছে প্রত্যাশা করতেই পারি, তারা এর বিস্তারিত কারণ আমাদের জানাবে। এজন্য আমরা তাদের অনুরোধ করেছি।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের উত্তরে শাহরিয়ার আলম বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কেউ কেউ সস্তা রাজনীতি করতে চাইছেন। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল বলছেন, ‘এবার জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা দেবে’। কেউ বলছেন- ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা দেবে’। এভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা আর বাড়াবে না বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের একজন সদস্য, যিনি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন, সেটা তার ব্যক্তিগত মতামত। শাহরিয়ার আলম বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে না, টিপিক্যাল লবিস্টের প্রয়োজন আছে। বিএনপির মতো লুকিয়ে কিছু করব না। জনগণের কাছে সম্পূর্ণ জবাবদিহিতা থাকবে। গোপন এজেন্ডা থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর।
এই নিষেধাজ্ঞার পর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাবকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়ারকে চিঠি দেয় আন্তর্জাতিক ১২টি মানবাধিকার সংস্থা।
র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ অসন্তোষ জানিয়েছে। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে গত ১১ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ঢাকার অসন্তোষের কথা জানানো হয়।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন ড. মোমেন। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনকে ফোন করে এ বিষয়ে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।