যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি স্কুলে বন্দুক হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ১৯ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া এক শিক্ষক এবং হামলাকারীও ওই হামলায় নিহত হয়েছে। হামলাকারী তরুণের বয়স ১৮ বলে জানিয়েছেন টেক্সাসের গভর্নর। তাকে থামাতে গুলি করতে বাধ্য হয় আইনরক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, একটি বন্দুক এবং এআর-১৫ এসল্ট রাইফেল নিয়ে হামলা চালানো হয়। তিনি কেনো এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি। তার প্রধান টার্গেট ছিল প্রাইমারি স্কুলের শিশুরা। যারা মারা গেছে তাদের বয়স ছিলো ৭ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। বেশিরভাগই স্কুলের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলো।
এছাড়া স্কুলের শিক্ষক ইভা মিরেলেসও গুলিতে নিহত হয়েছেন।
জানা গেছে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল এগারটার দিকে গুলি শুরু হয়। ওই কিশোর একাই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ওই স্কুলে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আছে এবং স্কুলে আসা অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়। যদিও স্থানীয় হাসপাতালগুলো বলছে যে স্কুল থেকে আনা কিছু শিক্ষার্থীকে জরুরি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল ইয়ুভালডে মেমোরিয়াল এক ফেসবুকে পোস্টে বলেছে, অ্যাম্বুলেন্স ও বাসে করে ১৩ শিক্ষার্থীকে সেখানে নেয়া হয়েছে।
এদিকে এ হামলা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামি শনিবার দেশের পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ ধরনের নির্বিচার গুলির ঘটনায় শুনতে শুনতে তিনি হতাশ ও ক্লান্ত। তিনি বন্দুক নিয়ন্ত্রণের জন্য আহবান জানিয়েছেন। শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ দেশটির প্রায় সব পর্যায়ের রাজনীতিকরাই। এ ধরনের ঘটনা এড়াতে একটি গ্রহণযোগ্য বন্দুক নীতিমালা প্রণয়নের আহবান জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস।
দক্ষিণ টেক্সাসের এই বন্দুক হামলার পর নরে চরে বসেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে বন্দুক সহিংসতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান আলোচনা চলছে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রনের দাবি জোরদার হচ্ছে দেশজুড়ে। এরইমধ্যে এ ঘটনা ঘটলো। যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে নির্বিচার গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে স্কুলে এভাবে গুলির ঘটনা দেশটিতে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শিক্ষা বিষয়ক একটি প্রকাশনার তথ্য অনুযায়ী গত বছরেই এ ধরণের অন্তত ২৬টি ঘটনা ঘটেছে। এমনকি স্কুলের পাঠক্রমে এ ধরণের ঘটনা হলে তা থেকে কিভাবে উদ্ধার পাওয়া যাবে তা শেখানো হয়। তারপরেও বন্দুক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক মহল বিভক্ত।