সংক্ষিপ্ত ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসে। স্থানীয় সময় বুধবার (১৩ মার্চ) কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ৩৫২-৬৫ ভোটে পাস বিলটি পাস হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিনিধি পরিষদে পাসের পর এখন বিলটি যাবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে। উচ্চকক্ষে পাস হলে বিলটি হোয়াইট হাউসে পাঠানো হবে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরের পর পুরোপুরি আইনে পরিণত হবে সেটি।
তবে সিনেটে বিলটির ভবিষ্যৎ কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ সেখানে কেউ কেউ বলেছেন, বিদেশি মালিকানাধীন অ্যাপগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করলে তা নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। সে সঙ্গে, ডেমোক্রেটিক সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠের নেতা চাক শুমার কীভাবে বিলটি সম্পর্কে কী পরিকল্পনা করছেন তা এখনো জানা যায়নি।
বিলটি পাসের ব্যাপারে আইনপ্রণেতারা যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ চীন সরকার বাইটড্যান্সের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা আইন ব্যবহার করে মার্কিন অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ডেটা হস্তান্তর করতে বাধ্য করতে পারে।
সিনেটের ভোটের ফলাফল যেন প্রতিনিধি পরিষদের অনুরূপ হয় সেজন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বুধবারই আহ্বান জানিয়েছেন নিম্নকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রিপাবলিকান পার্টির নেতা স্টিভ স্ক্যালিস। এক্স পোস্টে তিনি বলেন, ‘এই বিলটি খুবই স্পর্শকাতর এবং এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার ব্যাপারটি সম্পর্কিত। আমরা আশা করছি, সিনেট এর গুরুত্ব বুঝতে পারবে এবং এটি পাস করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ টিকটক ব্যবহার করে। টিকটকের মূল কোম্পানি চীনের বাইটড্যান্স।
মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে টিকটক নিষিদ্ধের বিলটি পাসের কিছুক্ষণ পর এক ভিডিও বার্তায় বাইটড্যান্সের শীর্ষ নির্বাহী শৌ জি চিউ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে- তা দেশটির অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। এতে একদিকে ক্ষুদ্র-খুচরা ব্যবসায়ীদের পকেট থেকে শত শত কোটি ডলার হারিয়ে যাবে অন্যদিকে অন্তত ৩ লাখ মার্কিনির কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে।’ ভিডিওবার্তায় শৌ জি চিউ আরো বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে শিগগিরই আইনি লড়াই শুরু করবে বাইটড্যান্স।
টিকটক নিষিদ্ধের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে- এমন কোনো প্রমাণ দেশটির সরকার পায়নি, তারপরও এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার জন্য ওয়াশিংটন উঠে পড়ে লেগেছে।’
রয়টার্সের খবর বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক আবহাওয়া টিকটক নিষিদ্ধের বিলটি পাসের পক্ষে। এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব আগেই জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সপ্তাহে বাইডেন বলেছিলেন, যদি টিকটক নিষিদ্ধ সংক্রান্ত কোনো বিল তার কাছে আসে, তাহলে সেখানে তিনি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। অন্যদিকে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাপটি নিষিদ্ধের পক্ষে থাকলেও এতে ফেসবুকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেটা লাভবান হবে বলে মত তার।