যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস দায়িত্ব নেওয়ার দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছেন। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
মূল্যস্ফীতিতে টালমাটাল অবস্থায় যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। এমন সময় সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন লিজ ট্রাস। এর আগে গতকাল বুধবার পদত্যাগ করেন ট্রাস মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম্যান।
বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ নেতা লিজ ট্রাসের পদত্যাগের ঘোষণার পর ‘এখনই’ জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি তুলেছেন লেবার নেতা কেইর স্টারমার।
করোনা বিধিনিষেধের মধ্যে বাসায় পার্টি করাসহ নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বরিস জনসন। বরিসের সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের ভোটে দলীয় নেতা নির্বাচিত হন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি। তার ৪৫ দিনের মাথায় এলো তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা। এর আগে ১৯২৭ সালে মাত্র ১১৯ দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন জর্জ ক্যানিং।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর লিজ ট্রাস সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ার্তেং সংক্ষিপ্ত বাজেট উপস্থাপন করার পর লিজ ট্রাসের সমস্যা শুরু হয়। ওই বাজেটে কর কমানোর ঘোষণা দিলে যুক্তরাজ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। কমে যায় ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম।
প্রধানমন্ত্রী ট্রাসের পদত্যাগের ফলে নজিরবিহীন রাজনৈতিক সংকটের মুখে পতিত হলো যুক্তরাজ্য। দলের পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্যাডলির সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষাত করার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন লিজ ট্রাস। দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকে আগামী সপ্তাহে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচনের সিদ্ধান্তও হয় বলে জানান ট্রাস। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পদত্যাগের ঘোষণার সময় লিজ ট্রাস বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখতে আমাদের যে পরিকল্পনা তা উপস্থাপনের পথেই থাকব আমরা।’