যাত্রী ঠাসা, তবু স্বস্তি মেট্রোরেলে

পবিত্র রমজানে দুপুর গড়াতেই নগরবাসীর তাড়া থাকে ঘরে ফেরার। স্বজনদের সঙ্গে ইফতারের টার্গেট নিয়ে তারা ছুটে চলেন গন্তব্যে। একসঙ্গে লাখো মানুষের ঘরে ফেরার এই তাড়ার ফলে সাধারণত বিকাল থেকেই রাজধানীর সড়কে দেখা দেয় তীব্র যানজটের। আর এই যানজটে অনেকটা স্বস্তির বাহন হয়ে উঠেছে মেট্রোরেল। যদিও ইফতারের আগ মুহূর্তে তিল ধারণের মতো ঠাঁই থাকে না এই গণপরিবহনে। রীতিমতো যুদ্ধ করে চড়তে হয় মেট্রোতে।

সোমবার (৩ মার্চ) বিকালে মতিঝিল স্টেশন থেকে আগারগাঁও আসা রুবেল নামের এক যাত্রী বলেন, রমজান পরিবারের সঙ্গে ইফতার করে যে শান্তি পাওয়ার যায় তা অন্য কোথাও করে পাওয়া যায় না। রোজায় অফিস সময় শেষ হওয়া মাত্রই রাস্তায় দেখা দেয় তীব্র যানজট। আমি অন্য যেকোনো বাহন ব্যবহার করে এলে সময় লাগত এক থেকে দেড় ঘণ্টা। কোনো কোনো সময় এরচেয়ে বেশি। এতে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা কঠিন হয়ে যেতো। কিন্তু মেট্রোতে উপচেপড়া ভিড় থাকার পরও আমরা কষ্ট করে একবার উঠে পড়লে ২০ মিনিটের মধ্যেই কিন্তু গন্তব্যে চলে এসেছি। এজন্য যাই বলুন না কেন, আমি তো মনে করি শুধু রমজান নয়, সারা বছরই স্বস্তির বাহন মেট্রোরেল।

ফার্মগেইট থেকে শেওড়াপাড়ায় আসা এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, দেখেন ভাই, আমি একজন চাকরিজীবী। দিন শেষে পরিবারই আমার কাছে সব। তাই সময় বাঁচাতে ও পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতেই মেট্রো ব্যবহার করি। ঢাকার রাস্তার যে অবস্থা, এতে করে মেট্রোতে যতই না চাপাচাপি হোক, সময় মতো আপনাকে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে এই বাহন।

মতিঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত আটটা ৪০ মিনিট পর্যন্ত চলছে বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেল। ঢাকার চিরচেনা যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকে এখন মেট্রোরেলকে বাহন হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। ফলে স্টেশনগুলোতে ভিড় বাড়ছে যাত্রীর।

রবিবার রোজার প্রথম দিনেও মেট্রোরেলে প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মতিঝিল স্টেশন থেকেই পুরোপুরি ভরে যায় মেট্রোরেলের বগি। পরের স্টেশনগুলো যাত্রীদের জন্য ওঠাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। রীতিমতো যুদ্ধ করে গন্তব্যে ফিরতে হয় যাত্রীদের। তবে শত কষ্ট হলেও চরম ভোগান্তির যানজট এড়াতে পারছেন, এটাই যাত্রীদের স্বস্তির কারণ।

নিয়মিত যারা মেট্রোতে যাতায়াত করেন তারা জানিয়েছেন, এই গণপরিবহনটি তাদের সময় অনেক সাশ্রয় করে দিয়েছে। এখন তারা কোন গন্তব্যে পৌঁছবেন, কতটা সময় লাগবে, সেটা আগে থেকে নির্ধারণ করেই বের হতে পারেন। রমজানে ইফতারের আগে প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও ইফতার শেষে বেশ সাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন হয়। দিন দিন মেট্রোরেল নগরবাসীর আস্থার ঠিকানা হয়ে উঠছে।

 

Comments (0)
Add Comment