উপমহাদেশজুড়ে আবারও শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির আস্ফালন। দেশে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর চলছে নির্যাতন। যার ছোঁয়া লেগেছে ক্রিকেটেও। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে হারের পর ভারতের তারকা পেসার মোহাম্মদ শামিকে সোশ্যাল সাইটে আক্রমণ করে বসে এক শ্রেণির উগ্র ধর্মান্ধ সমর্থকগোষ্ঠী। যার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন দেশটির শুভ চিন্তার মানুষ এবং সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা। এবার সাম্প্রদায়িক আক্রমণ নিয়ে কঠোর বার্তা দিলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
আজ রবিবার রাত ৮টায় নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ভারত। তার আগে গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বিরাট কোহলি বলেন, ‘কেন আমরাই মাঠে নেমে খেলছি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজেবাজে মন্তব্য করা মেরুদণ্ডহীন কিছু লোক সেটা পারছে না? তার একটি যথার্থ কারণ আছে। তাদের আসলে কোনো ব্যক্তির মুখোমুখি হয়ে কথা বলার সাহস নেই। তারা তাদের সত্তার আড়ালে লুকিয়ে থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্যকে আঘাত করে। মানুষকে নিয়ে মজা করা আজকের দুনিয়ার বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং দুঃখজনক।’
কোহলি আরো বলেন, ‘কোনো মানুষের মানসিকতা এটার থেকে আর নিচে নামতে পারে না। এই লোকগুলোকে এভাবেই দেখি আমি। আমি আগেও বলেছি, আমার কাছে কাউকে তার ধর্ম নিয়ে আক্রমণ করাটা সবচেয়ে বেশি দুঃখজনক ব্যাপার। প্রত্যেকেরই তাদের মতামত এবং কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে তারা কী ভাবে, তা জানানোর অধিকার আছে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এমনকি কখনো ধর্মের কারণে কাউকে বৈষম্য করার কথা ভাবিও নাই। ধর্ম প্রতিটি মানুষের কাছে অত্যন্ত ব্যক্তিগত ও পবিত্র বিষয় এবং বিষয়টিকে সেভাবেই দেখা উচিত।’
শামির পাশে দলের সবাই আছে জানিয়ে কোহলি বলেন, ‘আমরা মাঠে কী করি সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই নেই। গত কয়েক বছরে মোহাম্মদ শামি ভারতকে কত ম্যাচে জিতিয়েছে, সে বিষয়েও তারা অবগত নয়। দেশের প্রতি শামির প্যাশনকে যদি তারা অগ্রাহ্য করতে পারে, সত্যিই তাদের নিয়ে কথা বলে আমি সময় নষ্ট করতে চাই না। আমরা তাকে (শামি) ২০০ ভাগ সমর্থন করছি। যারা তাকে আক্রমণ করেছে তারা চাইলে আরো শক্তি নিয়ে আসতে পারে, তাতে আমাদের ভ্রাতৃত্ব, দলের মধ্যে আমাদের বন্ধুত্ব, কিছুই নড়চড় হবে না। অধিনায়ক হিসেবে আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি যে আমার দলে এমন বাজে পরিবেশ নেই।’