বিদেশে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্মার্টফোন রপ্তানিতে দ্বিতীয় স্থানীয় ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে সিম্ফনি। ব্র্যান্ডটি নেপালের অ্যাপেক্স গ্রুপের কাছে তাদের স্মার্টফোন রপ্তানি করছে।
সিম্ফনি মোবাইল ব্র্যান্ডের ‘পারেন্ট কোম্পানি’ (মূল কোম্পানি) এডিসন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শহীদ বলেন, “আমরা গত বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ১৫ হাজার স্মার্টফোনের চালান নিয়ে নেপালে রপ্তানি শুরু করেছি এবং এর ধারাবাহিকতায় মোবাইল হ্যান্ডসেটের দ্বিতীয় চালানটি রোববার পাঠানো হবে।”
শনিবার সাভারের আশুলিয়ায় সিম্ফনি মোবাইল কোম্পানির কারখানায় আয়োজিত রপ্তানি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, “আমরা ২০২২ সালের মধ্যে ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, ওমান ও নাইজেরিয়াসহ আরও পাঁচটি দেশে বাজারে আমাদের স্মার্টফোন রপ্তানির পরিকল্পনা করছি।”
এর আগে, ২০২০ সালের মার্চে স্থানীয় প্রযুক্তি সংস্থা ওয়ালটন তাদের গাজীপুরের কারখানা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোনের প্রথম চালান রপ্তানি করেছিল, যা দেশের জন্য একটি মাইলফলক স্থাপন করে।
২০১৮ সালে আশুলিয়ায় নিজস্ব কারখানা স্থাপন করে সিম্ফনি মোবাইল। তখন থেকেই তারা স্মার্ট ও ফিচার ফোন তৈরি করতে শুরু করে। আট স্তরের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ সমৃদ্ধ কারখানাটিতে বার্ষিক ১০.২ মিলিয়ন বা এক কোটিরও বেশি ডিভাইস তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে।
বর্তমানে ব্র্যান্ডটির উৎপাদিত ৭.২ মিলিয়ন বা ৭২ লাখ ডিভাইসের চাহিদা রয়েছে বাজারে। এরমধ্যে বেশিরভাগ চাহিদাই স্মার্টফোন ও ফিচার ফোনের।
জাকারিয়া শহীদ বলেন, বর্তমানে সিম্ফনির কারখানায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ কাজ করছেন। এছাড়া, চলতি বছরের মধ্যেই তাদের দুটি মডেলের ট্যাব তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের আগে তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মুহাম্মদ খলিলুর রহমান এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারকে সঙ্গে নিয়ে সিম্ফনি মোবাইল কারখানা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তিনি প্রোডাকশন লাইনের বিভিন্ন পর্যায় পরিদর্শন করেন এবং কারখানার কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পরবর্তীতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এক সময় ডিপ্লোমা পাস প্রকৌশলীদের কর্মসংস্থানের অভাব থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগের মাধ্যমে সেই অভাব পূরণ হয়েছে।
“এখন নেপাল আমাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন আমদানি করছে; কিছুদিন পরে হয়তো তারা নিজেদের দেশেই মোবাইল ডিভাইস তৈরি করবে। সেই সময়ে আমাদের প্রকৌশলীরা মোবাইল কারখানা স্থাপনে তাদের সহায়তা করতে সেখানে যাওয়ার সুযোগ পাবেন,” তিনি আরও বলেন।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের ফসল হিসেবেই হাজার হাজার ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
বর্তমানে, দেশে বছরে ৩৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৩ কোটি স্মার্টফোন ডিভাইসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ২৬.১ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদিত হচ্ছে স্থানীয় কারখানাগুলোতেই।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাসিম পারভেজ এবং মহাপরিচালক (স্পেকট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বক্তব্য রাখেন।