মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ৪ বছর, বাড়ল জরুরি অবস্থা

সামরিক অভ্যুত্থানে নোবেলজয়ী অং সান সূ চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ৪ বছর পূর্তির আগেরদিন মিয়ানমারজুড়ে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন জান্তা। খবর রয়টাসের।

চার বছর আগে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নিয়েছিল, যা দশককালের টালমাটাল গণতন্ত্রকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে মিয়ানমারকে আরও অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

ক্ষমতাসীন জান্তা এ বছর দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে, তবে এই আয়োজন শেষ পর্যন্ত প্রক্সিদের সাহায্যে জেনারেলদের ক্ষমতাকেই সুসংহত করবে বলে আশঙ্কা সমালোচকদের।

“সফলভাবে নির্বাচন আয়োজনে আরও বেশকিছু কাজ বাকি। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এখন স্থিতিশীলতা ও শান্তি দরকার,” জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে টেলিগ্রামে চ্যানেলে এমনটাই বলে রাষ্ট্রপরিচালিত গণমাধ্যম এমআরটিভি।

নির্বাচনের তারিখ এখনও ঘোষিত হয়নি, তবে জান্তা তার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলছে। একদিকে তারা দেশ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন অংশে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের দুর্বার প্রতিরোধের মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের।

২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর মিয়ানমারজুড়ে তরুণদের নেতৃত্বে যে তুমুল আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, জান্তা তা কঠোর হস্তে দমন করে। এর প্রতিক্রিয়ায় পরে দেশজুড়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ দানা বাঁধে।

মাসের পর মাস ধরে চলা এই সংঘাত এরই মধ্যে আনুমানিক ৩০ লাখ লোককে বাস্তুচ্যুত করেছে, সৃষ্টি করেছ বিস্তৃত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের এখনই মানবিক ত্রাণ সহায়তা দরকার।

বৈশ্বিক এ সংস্থার মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত লড়াইরত সব পক্ষকে আলোচনায় বসতে এবং ‘একবিন্দুও ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা’ পরিহারেরও আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সংঘাতের পাশাপশি দেশটির অর্থনীতির অবস্থাও এখন তথৈবচ। অনেক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ, অনেকে আবার নির্বাচনে অংশ নিতেও রাজি নয়, তা সত্ত্বেও জান্তা এ বছরই নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর।

বিরোধীরা এই নির্বাচন বানচালের পরিকল্পনা করছে; নির্বাচনের ফলাফলকে স্বীকৃতি না দিতে তারা বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বানও জানিয়ে রেখেছে।

নির্বাচন হলেও তা হবে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, বলেছে তারা।

Comments (0)
Add Comment