বর্ণবাদ বিরোধী ন্যায় বিচারের আহ্বানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মার্কিন যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে সমাহিত করা। তাকে সমাহিত করা হয়েছে মায়ের পাশে। সম্প্রতি মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে শেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাদের নৃশংস নির্যাতনে মারা যান তিনি। এ মৃত্যুতে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে টেক্সাসের হিউজটনে একটি চার্চের বক্তারা লাইন দিয়ে তাকে স্মরণ করেন। তারা বলেন, তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যার অপরাধ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে জন্ম নেয়া। চার্চে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার কফিন মোটর শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয় হিউজটন মেমোরিয়াল গার্ডেনস-এ। সেখানে তার মায়ের কবরের পাশেই সমাহিত করা হয় জর্জ ফ্লয়েডকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। জর্জ ফ্লয়েডের ভাতিজি ব্রুক উলিয়াম আইন পরিবতর্ননের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিদ্যমান আইনকে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের জন্য ‘ডিজঅ্যাডভানটেজ’ বল আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, তার চাচাকে হত্যা করা হয় নি শুধু, এটা পুরো ঘৃণাপ্রসূত অপরাধ। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কেন এই ব্যবস্থা দুর্নীতিযুক্ত এবং ভঙ্গুর? প্রশ্ন করে নিজেই এর জবাব দেন। বলেন, এসব আইন আফ্রিকান-আমেরিকান ব্যবস্থায় ব্যর্থ। তাই এসব আইন পরিবর্তন করতে হবে। এ সময় কেউ কেউ বলে ওঠেন, ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’। কিন্তু ‘আমেরিকা গ্রেট হয়েছিল কখন?’
জর্জ ফ্লয়েডের প্রতি শেষ শ্রদ্ধার অনুষ্ঠানে তার প্রতি ভিডিও ম্যাসেজের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধী ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, যখন জর্জ ফ্লয়েডের প্রতি সুবিচার করা হবে, তখনই আমরা আমেরিকায় বর্ণবাদ বিরোধী সুবিচারের পথে সত্যিকারভাবে এগিয়ে যাবো। জর্জ ফ্লয়েডকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করা মন্তব্যেরও প্রতিবাদ জানান জো বাইডেন।
জর্জ ফ্লয়েডের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠান হয় ফাউন্টেইন প্রেইজ চার্চে। সেখানে বিভিন্ন রাজনীতিক, সেলেব্রিটি সহ প্রায় ৫০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান আল গ্রিন এতে বলেন, জর্জ ফ্লয়েডের অপরাধ ছিল কালো হয়ে জন্ম নেয়া। বর্ষীয়ান নাগরিক অধিকারকর্মী রেভারেন্ড আল শার্পটন বলেছেন, সারা বিশ্বে আমি দেখতে পাচ্ছি দাসত্বের উত্তরসূরিরা কাঁদছে। মিনেসোটায় গভর্নর টিম ওয়ালজ জনগণকে আহ্বান জানান এই শেষ বিদায়ে ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড নীরবতা পালনের মাধ্যমে তাকে সম্মান জানাতে। উল্লেখ্য, ঠিক ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড জর্জ ফ্লয়েডকে মাটির সঙ্গে শেতাঙ্গ পুলিশরা হাঁটু দিয়ে মাটির সঙ্গে চেপে ধরে রেখেছিল। এ সময়ের মধ্যে তিনি মারা যান।