নিকোলাস ভুজিসিক। হ্যা, ১৯৮২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে দু হাত, দু পা বিহীন জন্ম নেয়া শিশুটির নাম ছিলো নিকোলাস ভুজিসিক। এ ধরনের শারীরিক সমস্যাকে বলা হয় টেট্রা আম্যালিয়া ডিজঅর্ডার।
নিকোলাসের আত্মজীবনী থেকে জানা যায়, জন্মের পর সেবিকা যখন তাকে তার মার কোলে তুলে দিচ্ছিলেন তখন তার এমন শারীরিক অবস্থা দেখে তার গর্ভধারিণী মাও তাকে দেখতে বা কোলে নিতে অস্বীকার করছিলেন।
যাই হোক, ধীরে ধীরে বড় হচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য আশেপাশের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন উপহাসের পাত্র। তার বাবা অবশ্য বলতেন, ‘তুমি ঈশ্বরের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটা উপহার, শুধু একটু ভিন্ন মোড়কে, এই যা। তুমি কখনো হতাশ হয়ো না।’
বাবার আশ্বাসে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে চললেন তিনি। স্নাতক করেছেন দটি বিষয়ের উপর “অ্যাকাউন্টিং” ও ফিন্যান্সিয়াল প্লানিং”।
নিকোলাস এখন সারা বিশ্বে সুপরিচিত একজন মোটিভেশনাল স্পিকার। বড় বড় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দেন। তার কথা শুনে হাজারো মানুষ নিজেদের মোটিভেট করছে । তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন যেগুলো দারুণ জনপ্রিয়। তার প্রথম বই ‘লাইফ উইদাউট লিমিটসঃ ইন্সপিরেশন ফর আ রিডিকুলাসলি গুড লাইফ’ ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় এবং বইটি ৩০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
তবে তিনি সবসময় ভাবতেন, হয়তো তিনি কখনো বিয়ে করতে পারবেন না। কারন তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য কোন নারী তাকে পছন্দই করবে না, বিয়েতো বহুদূর।
তার সেই ধারণা বদলে যায় ২০০৮ সালে যখন জাপানী বংশোদ্ভূত আমেরিকান নারী “ক্যানা মিয়াহারা” তার জীবনে আসেন।
ক্যানা বলেন, আমি যখন ওকে প্রথম দেখি তখন যেন মনে হলো আমি যা চাই তার সবই তার ভেতর আছে। তারপর চেনাজানা এবং পছন্দ করে বিয়ে করি ২০১২ সালে।
সাংবাদিকরা ক্যানাকে একবার জিজ্ঞাসা করেন, যদি আপনার সন্তানও নিকোলাস এর মতো হয়? উত্তরে ক্যানা জানান- তাহলে আমিও আরেক নিকোলাসের জন্ম দেবো।
এই সুখী দম্পতির চারটি ফুটফুটে সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তারা সাউদারন ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করছেন।